
শিলচর (অসম), ১১ অক্টোবর (হি.স.) : বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে বরাক উপত্যকার অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক এলাকা শিলচরের ফাটকবাজারে একটি গুদাম-সহ প্রায় এগারোটি দোকানঘর জ্বলে ছাই হয়ে গেছে। ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাত ১২.৩০ থেকে হলেও আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে শুক্রবার সকাল প্রায় সাতটা নাগাদ। একই জায়গায় দু দফায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে সদর থানা সূত্রের খবরে জানা গেছে।
রাত তখন প্রায় সাড়ে বারোটা। শিলচর সদর থানা এবং ফাটকবাজার কালীবাড়ির ঠিক উলটো দিকে বাজারের ভিতরে গোপাল এন্টারপ্রাইজ নামের এক বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পণ্যসামগ্রীর বিশাল গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাতের বেলায় অকুস্থলে তেমন মানুষজন না থাকায় আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করতে থাকে লাগোয়া দোকানগুলিতে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে ফরেন মার্কেটেও।
খবর পেয়ে প্রথমে তারাপুর থেকে ছয়টি এবং খানিক পর শ্রীকোণা থেকে ওএনজিসি-র আরও দুটি মোট আটটি ইঞ্জিন নিয়ে ছুটে আসে দমকল ও এসডিআরএফ-এর দল। তাঁদের অক্লান্ত চেষ্টায় প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। দমকল বাহানি চলে যাওয়ার পর ভোর পাঁচটা নাগাদ নতুন করে ফের দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে জনৈক রবীন্দ্রচন্দ্র পালের দোকানে আগুন। ছুটে আসেন দমকল কর্মীরা। এসেই আগুন নেভানোর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁরা। পরে সকাল প্রায় সাতটা নাগাদ আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে সক্ষম হন অগ্নিনির্বাপক বাহনীর জওয়ানরা।
অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর জনৈক আধিকারিক জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর গলি-রাস্তা খুর সরু থাকায় তাঁদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে। তাছাড়া কিছুটা দূরে সদর থানা সংলগ্ন জলাধার থেকে হিউজপাইপ সহযোগে জল সংগ্রহ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁদের। যার দরুন আগুনের কবলে পড়ে এতটা প্রতিষ্ঠান ভস্ম হয়ে গেছে। এদিকে প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ হিসেবে বৈদ্যুতিক গোলযোগ বলে ধারণা করছেন তাঁরা, বলেন আধিকারিকটি। জানা গেছে, আগুনে জনৈক কৃপাময় পাল, হরি পাল, বিজয়কৃষ্ণ পাল, কাবুল হুসেন, কার্তিক পাল, রবীন্দ্রচন্দ্র পালের মোট নয়টি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ তারিখ মহালয়ার সকালেও শিলচর শহরের অম্বিকাপট্টি এলাকায় দুর্গা মণ্ডপের কাছে ফুড অ্যান্ড ফ্লেভারস নামের এক রেস্তরাঁয় আগুন লেগেছিল। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখায় রেস্তরাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বিল্ডিঙের ওপর তলে এসবিআই লাইফ ইনস্যুরেন্স-সহ আরও কয়েকটি বেসরকারি অফিস ও দোকান রক্ষা পেয়েছিল।

