প্রতীক্ষার অবসান হতে চলেছে সাব্রুমে এমাসেই যাত্রীবাহী ট্রেন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ সেপ্ঢেম্বর৷৷ প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে৷ ভারতের রেল মানচিত্রের সাথে এ-মাসেই জুড়তে চলেছে সাব্রুম৷ ত্রিপুরার সদূর দক্ষিণের এই শহর রাজ্যের শেষ প্রান্তে অবস্থিত৷ শুক্রবার গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাংসদের নিয়ে সীমান্ত রেলওয়ের আধিকারিকদের বৈঠকে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে৷ সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক জানিয়েছেন, ২০ সেপ্ঢেম্বরের মধ্যেই সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে৷ সে-মোতাবেক সমস্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে৷
এদিকে, আজ শুক্রবার আগরতলায় ডেমু ট্রেনের রেক এসে পৌঁছেছে৷ তবে, সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়তো আগরতলার বদলে ধর্মনগর থেকে হতে পারে৷ কারণ, বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের কারণে নির্বাচনী আচরণবিধি আগরতলা রেল স্টেশনে এই আয়োজনের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে৷


আজ গুয়াহাটির মালিগাঁওয়ে অবস্থিত উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য কার্যালয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাংসদরা এক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন ৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মিজোরাম থেকে রাজ্যসভার সাংসদ রোনাল্ড সাপা তলাউ, নাগাল্যান্ড থেকে রাজ্যসভার সাংসদ কেজি কেনিয়ে, মেঘালয় থেকে রাজ্যসভার সাংসদ ওয়ানসুক সিয়েম, অসম থেকে রাজ্যসভার সাংসদ রিপুন বরা, বীরেন্দ্র প্রসাদ বৈশ্য, মিজোরাম থেকে লোকসভার সাংসদ সি লালরুসাঙ্গা, অসমের প্রদ্যুত বরদলৈ, কুইন ওঝা, ত্রিপুরার সাংসদ রেবতি কুমার ত্রিপুরা ও প্রতিমা ভৌমিক এবং মণিপুরের ড় রঞ্জন সিং রাজকুমার ৷ তবে শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায় উপস্থিত ছিলেন না ৷ তিনি প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন৷


বৈঠক শেষে সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রেল পরিষেবা নিয়ে আজ ইতিবাচক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ওই বৈঠকে ত্রিপুরার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছি৷ তিনি বলেন, সাব্রুম রেল যোগাযোগ ২০ সেপ্ঢেম্বরের মধ্যেই স্থাপন হতে চলেছে৷ তাঁর কথায়, আজ বৈঠকে রেলওয়ে আধিকারিকরা ১৬ সেপ্ঢেম্বরের মধ্যেই সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবা আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনার জন্য প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ৷ তবুও ২০ সেপ্ঢেম্বরের মধ্যে সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবা শুরু হোক, তা নিশ্চিত করতে বলেছি ৷


তিনি বলেন, আজ বৈঠকে আগরতলা থেকে দূরপাল্লার সমস্ত এক্সপ্রেস ট্রেনে সংরক্ষিত আসন সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাবও রেখেছি৷ তাঁর কথায়, আগরতলা থেকে দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে ত্রিপুরার জন্য বরাদ্দ সংরক্ষিত আসন কম ৷ ফলে প্রায়ই ত্রিপুরার যাত্রীরা প্রয়োজন মতো টিকিট কাটতে পারেন না ৷ তাই, সমস্ত দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষিত আসন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছি, বলেন তিনি৷ সাথে যোগ করেন, আগরতলা-শিলচর এবং শিলচর-আগরতলা ইন্টারসিটি এবং আগরতলা-গুয়াহাটি শতাব্দি এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করারও অনুরোধ জানিয়েছি৷


এদিন তিনি বলেন, পেঁচারথল থেকে খোয়াই হয়ে বিলোনিয়া পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপনের সার্ভে কাজ কতদূর এগিয়েছে সে-বিষয়েও খোঁজখবর নিয়েছি ৷ পাশাপাশি, আগরতলা থেকে শিলচর ও গুয়াহাটি পর্যন্ত রেল পরিষেবার মান আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি ৷ প্রতিমা ভৌমিক বলেন, আগরতলায় পৃথক রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড এবং রেলওয়ে পুলিশ ফোর্সের কার্যালয় স্থাপনেরও দাবি জানানো হয়েছে৷ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ত্রিপুরার সমস্ত দাবি বিবেচনা করবে রেলমন্ত্রক৷
এদিকে, সাব্রুম পর্যন্ত রেল পরিষেবা সূচনার অনুষ্ঠান আগরতলা রেল স্টেশনে হওয়া সম্ভব বলে মনে হচ্ছে না৷ কারণ, বাধারঘাট কেন্দ্রে উপনির্বাচন ২৩ সেপ্ঢেম্বর৷

ফলাফল ঘোষণা হবে ২৭ সেপ্ঢেম্বর৷ ফলে, নির্বাচনী আচরণবিধি আগরতলা রেল স্টেশনে নতুন রেল সূচনার অনুষ্ঠানে বাধা হয়ে দাঁড়াবে৷ তাই ধারণা করা হচ্ছে, ২০ সেপ্ঢেম্বরের মধ্যে সাব্রুম রেলের সূচনা হলে ধর্মনগরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতে পারে৷ কারণ, সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক জানিয়েছেন, সাব্রুমের রেল সূচনার অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আসতে পারেন৷


তবে, এ-মাসেই সাব্রুমে রেল পৌঁছে যাচ্ছে, তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে৷ কারণ, ডেমু ট্রেনের রেক আগরতলায় এসে পড়েছে ৷ জানা গেছে, আগরতলা-সাব্রুম এবং আগরতলা-ধর্মনগরের জন্য একটি করে রেক আগরতলায় এসে পৌঁছেছে ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *