
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যে সম্পদ করে সমতা আনা হয়েছে৷ তাতে মানুষের কাঁধে নতুন করের বোঝা চাপানো হচ্ছে না৷ মঙ্গলবার বিধানসভায় সম্পদ কর নিয়ে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ এভাবেই উড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷
মঙ্গলবার বিধানসভায় সম্পদ কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত জনস্বার্থে আনা নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরার নগরোন্নয়ন দফতর ২০১৬ সালের পর সম্পদ কর সংশোধন বা সমতা আনার কোনও কাজে হাত দেয়নি৷ অন্যদিকে নগর এলাকার সম্প্রসারণ, নগর পরিচ্ছন্ন রাখা, কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট সংস্কার, পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থাপনা, বাজারহাট পরিচ্ছন্ন রাখা, স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা এবং ভারী মেশিনসমূহ ক্রয় করা ইত্যাদি বাবদ স্থানীয় নগর সংস্থাগুলোর ব্যয় অনেক গুণ বেড়ে গেছে৷ অথচ, বিভিন্ন স্থানীয় নগর নিগমগুলির মধ্যে সম্পদ করের কোনও সমতা ছিল না, বলেন তিনি৷
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আমবাসা পুরপর্ষদের ১,০০০ বর্গ ফুট পাকা বাড়ির জন্য সম্পদ কর যেখানে ১,২৪০ টাকা, সেখানে উদয়পুর পুরপর্ষদ ৬৬০ টাকা এবং ধর্মনগর পুরপর্ষদে ৪০০ টাকা৷ বর্তমানে সমতা এনে প্রতি ১,০০০ বর্গ ফুট পাকা বাড়ির জন্য ৯০০ টাকা সম্পদ কর স্থির করা হয়েছে৷
সাথে তিনি যোগ করেন, কমলপুর নগর পঞ্চায়েতে ১,০০০ বর্গ ফুট পাকা বাড়ির জন্য সম্পদ কর ছিল ৭০০ টাকা এবং সোনামুড়া নগর পঞ্চায়েতে তা ২৮০ টাকা ছিল৷ বর্তমানে সমতা এনে ৮০০ টাকা করা হয়েছে৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরা মিউনিসিপাল (এসেসমেন্ট অ্যান্ড কালেকশন অব প্রপার্টি টেক্স) রুলস-এর ৭ নম্বর রুলস অনুসারে প্রত্যেক স্থানীয় নগর সংস্থাগুলিকে তাদের এলাকার সম্পদ সম্পর্কিত বিভিন্ন জোনে ভাগ করতে হবে৷ সেই অনুসারে এলাকার আয়তন এবং জনসংখ্যা অনুসারে আগরতলা পুর নিগমকে ৪-টি জোন এবং অন্যান্য নগর সংস্থাগুলিকে ২-টি জোনে ভাগ করা হয়েছে৷ আগরতলা পুরনিগমের চারটি জোনের মধ্যে প্রথম তিনটি জোনে সম্পদ কর সামান্য বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ কিন্তু, এই বৃদ্ধি সাধারণের সাধ্যের মধ্যেই রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
তাঁর সাফ কথা, সমস্ত বিষয় বিবেচনা করে সম্পদ কর সংশোধন ও বিভিন্ন নগর নিগমগুলির মধ্যে সমতা আনা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল৷ তাই নগরোন্নয়ন দফতর এক বিজ্ঞাপ্তি জারি করে মূল সম্পদ কর সংশোধন এবং সমতা আনার চেষ্টা করেছে৷
এ-বিষয়ে সিপিআইএম বিধায়ক নির্মল বিশ্বাসের বক্তব্য, পুর এবং নগর সংস্থার সাথে কোনও আলোচনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এতে সাধারণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হবে বলে দাবি করেন তিনি৷ তাঁর কথায়, আগরতলার সাথে ত্রিপুরার অন্যান্য পুর ও নগর সংস্থা এলাকাকে এক আসনে বসানো উচিত হবে না৷ তাঁর আবেদন, সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে সম্পদ কর বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হোক৷ তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুর ও নগর সংস্থার ট্যাক্স বোর্ডের সুপারিশ মেনেই কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷

