রাজ্যের পৃথক স্থানে বিস্তর পরিমাণে নেশা সামগ্রী বাজেয়াপ্ত, গ্রেপ্তার চার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ আগস্ট৷৷ অসমের সীমান্তবর্তী উত্তর ত্রিপুরার পানিসাগরে ড্রাগস-সহ দুই পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে৷ তাদের একজনের বাড়ি করিমগঞ্জ (অসম) জেলার রাতাবাড়ি থানার অন্তর্গত আনিপুরে এবং অন্যজন পানিসাগর থানা এলাকার চামটিলায়৷ ধৃতদের হেফাজত থেকে বহু লক্ষ টাকার মাদক দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷


পানিসাগরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিজিৎ দাস জানান, গোপন সূত্রের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার শেষরাতে এবং শুক্রবার পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা৷ জানান, আজ সকালে পানিসাগর থানার ওসি সৌগত চাকমাকে সঙ্গে নিষে তিনি রামনগর এলাকায় অসম-ত্রিপুরা ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে ড্রাগস পাচারকারীদের পাকড়াও করতে ওত পেতে বসেছিলেন৷ বেলা প্রায় ১১টা নাগাদ একটি বেসরকারি যাত্রীবাহী গাড়িতে তালাশি চালিয়ে এক যুবককে আটক করেন পুলিশের অভিযানকারীরা৷ ধৃতকে হুসেন আলি (২৯) বলে পরিচয় পাওয়া গেছে৷ ধৃতের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিজিৎ দাস জানান, তার বাবার নাম ফুরকান আলি৷ তাদের বাড়ি অসমের করিমগঞ্জ জেলার রাতাবাড়ি থানার আনিপুর ৬২ হাল এলাকায়৷ হুসেনের হেফাজত থেকে কমপক্ষে এক লক্ষ টাকার মোট ছয়টি হেরোইনের পাউচ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে৷ প্রতিটি প্যাকেটে ১২ গ্রাম করে হেরোইন রয়েছে৷ ধৃত হুসেন আলির বিরুদ্ধে পানিসাগর থানায় এনডিপিএস আইনের বলে মামলা রুজু হয়েছে বলে জানান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিজিৎ দাস৷


এছাড়া বৃহস্পতিবার শেষ রাতে টহলের সময় চামটিলা সংলগ্ণ ট্রাইজংশন এলাকায় হানা দিয়ে প্রথমে একটি সন্দেহভাজন ওয়াগন-আর আটক করে এক মাদক-সহ এক পাচারকারীকে আটক করা হয়েছে৷ গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১২০টি হেরোইনের কৌটা এবং ৪৫০টি নেশার ট্যাবলেট ইয়াবা৷ এই নেশা সামগ্রীর বাজারমূল্য প্রায় তিন লক্ষ টাকা হবে বলে জানান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিজিৎ দাস৷ চামটিলায় ধৃত ড্রাগস কারবারি যুবকের নাম বিজয়বিক্রম রায় (২১)৷ তার বাবার নাম রাখাল রায়৷


এসডিপিও জানান, দুই ধৃতকে আজ ধর্মনগরের বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হয়েছিল৷ আদালতের নির্দেশে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে৷ তাছাড়া বাজেয়াপ্তকৃত নেশা সামগ্রীগুলো পরীক্ষার জন্য আগরতলায় ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান এসডিপিও৷
গুয়াহাটি রেলওয়ে স্টেশনে শুক্রবার সকালে বিপুল পরিমাণের গাঁজা উদ্ধার করল জিআরপিএফ৷ গাঁজা পাচারেরে অভিযোগে আটক করে গ্রেফতার করা হয়েছে এক যুবককে৷ ধৃত যুবককে রূপম মিয়াঁ বলে পরিচয় পাওয়া গেছে৷ তার বাড়ি পশ্চিম ত্রিপুরার খৈরাবাড়ি গ্রামে৷


গুয়াহাটি রেলস্টশনে জিআরপিএফ থানা সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল প্রায় ৭.৪০টায় ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে রূপম মিয়াঁকে আটক করা হয়৷ সে ত্রিপুরাগামী কোনও ট্রেনের অপেক্ষা করছিল৷ তার পাশে রাখা ছিল বড় বড় পাঁচটি ব্যাগ৷ ব্যাগগুলিতে তালাশি চালিয়ে ৩০ কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেন জিআরপিএফ জওয়ানরা৷ এগুলির বাজারমূল্য আনিমানিক পাঁচ লক্ষ টাকা হবে বলে ধারণা করছেন জিআরপিএফ অফিসার৷


ধৃতের বিরুদ্ধে রেল পুলিশ নিজস্বভাবে এক মামলা রুজু করে গ্রেফতার করেছে৷ আজই তাকে বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হবে৷
অন্যদিকে, ৯২ কেজি গাঁজা সহ ১৪ চাকার লরি এবং চালক ও সহ চালককে আটক করল মুঙ্গিয়াকামী থানার পুলিশ৷ শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ লরিটি আটক করে এই সাফল্য পায় পুলিশ৷ আটক চালক ও সহ চালককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে৷ রাজ্য সরকার রাজ্যকে নেশামুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করার কথা বললেও নেশা কারবারীরা নানা কৌশলে তাদের বাণিজ্য বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে৷ এখনও রাজ্য থেকে নেশা বাণিজ্য শেষ হয়নি৷ এই নেশা সামগ্রী বর্তমানে সমাজ ব্যবস্থার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাট করছে৷ রাজ্যের সবকটি থানার পুলিশ সোর্সের খবরের উপর ভিত্তি করে সাফল্য অর্জন করছে৷ কিন্তু নেশা বিরোধী অভিযানে তেলিয়ামুড়া থানার সাফল্য অনেকাংশে কম বলা যেতে পারে৷

তবে এক্ষেত্রে মুঙ্গিয়াকামী থানার পুলিশ নিত্যদিন জাতীয় সড়কের নাকা পয়েন্টে গাড়ি চেকিং করে চলেছে৷ শুক্রবারও গাড়ি চেকিং করার সময় পুলিশ বিআর১১জিবি-৫৬৯৪ নম্বরের ১৪ চাকার লরি থেকে ৯২ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে৷ পুলিশ গাড়ি সহ চালক ও সহচালককে আটক করে৷ ধৃত দুইজনের নাম বুদ্ধ কুমার মণ্ডল এবং চন্দন কুমার মণ্ডল৷ ধৃতদের বাড়ি বিহার রাজ্যে৷ শুক্রবার সকালে আগরতলা থেকে কে বা কারা ওষুধ বলে গাঁজা তুলে দেয় বলে জানায় লরির চালক ও সহচালক৷
লরিটি আগরতলা থেকে বিহার যাচ্ছিল৷ অথচ ওই গাড়িটি তেলিয়ামুড়া থানার সামনে দিয়ে যায়৷ কিন্তু তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশে কোনো খবরই নেই৷ পরে মুঙ্গিয়াকামী থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ল গাঁজা সহ লরিটি৷ মুঙ্গিয়াকামী থানার পুলিশ এবার ধৃত দুইজনকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *