বন ও বন্যপ্রাণীকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে রাজ্যে, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ আগস্ট৷৷ ত্রিপুরার বন ও বন্যপ্রাণীকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্প বিকাশের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে৷ দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ৷ তাই, ওই লক্ষ্যে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বন এবং পর্যটন দফতরকে সমন্বয় রেখে কাজ করতে নির্দেশ দেন তিনি ৷ সাথে যোগ করেন, দেশ-বিদেশের প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের আরও বেশি করে আকৃষ্ট করতেও উদ্যোগ নিতে হবে বন দফতরকে৷


মঙ্গলবার সচিবালয়ের ২ নম্বর সভাকক্ষে রাজ্য বন্যপ্রাণী পর্ষদের এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ওই সভায় এ-বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে ত্রিপুরা সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে৷ আগরতলা বিমানবন্দর থেকে সাব্রুমের ফেণি নদী হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার পর্যন্ত সড়কের সার্বিক উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের কথা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷


তাঁর কথায়, দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আগরতলা বিমানবন্দর হয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার পর্যন্ত দীর্ঘ রাস্তায় যাওয়ার পথে যে সমস্ত ধর্মীয়, প্রত্নতাত্ত্বিক পর্যটন কেন্দ্র, মিউজিয়াম, অভয়ারণ্য রয়েছে সেগুলিকে আকর্ষণীয় এবং উন্নত করে তুলতে রাজ্য সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে ৷ এ-ক্ষেত্রে সিপাহিজলা অভয়ারণ্যকে কীভাবে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বন দফতরের আধিকারিকদের পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বন দফতরের যে-সমস্ত শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অতিথিশালা রয়েছে সেগুলিকে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসতে হবে ৷

পাশাপাশি শীতকালীন মরশুমে রাজ্যে যে-সমস্ত পরিযায়ী পাখি আসে সেগুলি সম্পর্কেও রাজ্য এবং দেশের প্রকৃতিপ্রেমী এবং ভ্রমণ পিপাসুদের নজরে নিয়ে আসতে প্রচার অভিযান চালাতে হবে ৷ তাঁর বক্তব্য, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত জনপ্রিয় আকর্ষণীয় বৃহৎ অভয়ারণ্যগুলির বিভিন্ন দিক অনুকরণ করে রাজ্যের অভয়ারণ্যের উন্নয়নে উদ্যোগ নিতে হবে ৷ প্রয়োজনে নতুন করে অভয়ারণ্য তৈরি করার প্রয়োজন পড়লে সে-বিষয়েও বন দফতরকে উদ্যোগ নিতে হবে ৷


এদিন মুখ্যমন্ত্রী তৃষ্ণা অভয়ারণ্যে বাইসন সাফারি গড়ে তোলার বিষয়েও আলোচনা করেছেন ৷ তিনি অভয়ারণ্যগুলির ভেতরে বন্যপ্রাণীদের ঘোরাফেরার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা উন্মুক্ত রাখার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন ৷ সিপাহিজলা চিড়িয়াখানার প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার জন্য পৃথক দ্বার তৈরি করার বিষয়েও সভায় গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি ৷


সভায় আলোচনাকালে মুখ্যমন্ত্রী নাগাল্যান্ডের মতো ত্রিপুরায়ও হর্নবিল উৎসব আয়োজনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে বন দফতরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলেন ৷ এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী ‘অরিওল’ নামক এক সফটওয়্যার-এর উদ্বোধন করেন ৷ এই সফটওয়্যারে ত্রিপুরার ৬০টি বিভিন্ন প্রজাতির পাখির ডাক লিপিবব্ধ করা হয়েছে ৷


এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী সভায় সিপাহিজলার প্রকৃতি শিক্ষাকেন্দ্রের দ্বারা তৈরি কিশোরদের জন্য গ্রিন অ্যাকটিভিটি শীর্ষক একটি বই উন্মোচন করেন ৷ সভায় ত্রিপুরার চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন ডিকে শর্মা স্টেট ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডের সর্বশেষ সভায় গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যে-সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন ৷ তিনি বলেন, রাজ্যে ভালোসংখ্যক হর্নবিল পাখি রয়েছে ৷ বড়মুড়ায় হর্নবিল সংরক্ষণের স্থান নির্ণয়ের বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *