পশু জবাইকে কেন্দ্র করে ইছাবাজারে ঈদ-উদ-জোহা পালন করেননি স্থানীয়রা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ আগস্ট৷৷ সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসরত মুসলিম ধর্মের মানুষ কুরবানির ঈদের আনন্দে শামিল হলেও রাজধানী আগরতলার এডিনগর ধানাধীন ইছাবাজার এলাকার রেললাইন সংলগ্ণ মুসলিমপাড়ায় পুরো উল্টো চিত্র লক্ষ করা গেছে৷ আজ রবিবার এই পাড়ায় আনন্দের পরিবর্তে হতাশার ছবি বিরাজ করছে৷


এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত রাতে স্থানীয় এবং পার্শবর্তী এলাকার একদল যুবক তাদের পাড়ায় ঢুকে শাসিয়ে গেছে৷ অনুপা খাতুন এবং এআর রসুল মিঞা জানান, ওই সব যুবক এসে নাকি শাঁসিয়ে গেছে, সোমবারের ঈদ পালন করবেন৷ কিন্তু পশু, বিশেষ করে গরুকে যেন তাঁরা কুরবানি না দেন৷ যদি তাদের কথার অমান্য করে গরু জবাই করা হয়, তা-হলে বহিরাগত লোক দিয়ে হামলা চালানো হবে৷
তখন নাকি তাঁরা বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে পূর্বপুরুষরা এই ঈদের দিন কুরবানি দিয়ে আসছেন৷ হঠাৎ করে কেন তাঁরা তাঁদের ধর্মীয় রীতি পালন করতে পারবেন না? এতে আগন্তুকরা আরও কড়া সুরে বলে, তারা যে কথা বলেছে তা যেন পালন করা হয়৷ অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে৷ তখন তারা বলেন, যদি তাদের এই নির্দেশ থাকে তবে আগে বলা উচিত ছিল৷ এ-কথা আগে জানলে তারা টাকা খরচ করে গরু কিনতেন না৷ চা শুনে যুবকদের পরামর্শ, গরুগুলি বিক্রি করে নিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে৷


এমতাবস্থায় ভীত সন্তস্ত্র হয়ে তাঁরা প্রথমে পুলিশ, শাসক দলের স্থানীয় নেতা, এমন-কি স্থানীয় বিধায়ক রামপ্রাসাদ পালের কাছে গিয়েছেন৷ কিন্তু সব শুনে সকলের একই বক্তব্য, যেহেতু কুরবানি দিতে মানা করা হয়েছে তাই কুরবানি ছাড়াই ঈদ পালন করা হোক, অভিযোগ করে বলেছেন অনুপা খাতুন এবং এআর রসুল মিঞারা৷ তাই তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ-বছর ঈদ পালন করেননি৷ এমন-কি নামাজও পড়েননি বলেও জানান তাঁরা৷


এলাকাবাসী কী ওই সব যুবকদের চিনতে পেরেছেন? এর উত্তরে তাঁরা জানান, কয়েকজনকে শনাক্ত করা গেছে৷ তাছাড়া তাদের মধ্যে কয়েকজন যুবকদের বহিরাগত বলে মনে হয়েছে৷ তাঁরা আরও জানান, কোনও দিন তাঁরা নিজেদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে গিয়ে এমন বিড়ম্বনার সম্মুখিন হননি৷
এ-বিষয়ে স্থানীয় বিধায়ক রামপ্রাসাদ পালের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু তাঁর কাছ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি৷ পরে এডিনগর থানায় যোগাযোগ করে এ-বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওসি রমেন্দ্র দেববর্মা জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকায় তাঁরা ১০ জন টিএসআর জওয়ান, আধিকার-সহ কয়েকজন পুলিশ কর্মী পাঠিয়েছেন৷ তারা সেখানে টহল দিচ্ছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *