![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/08/DSC_01628-17-1024x683.jpg)
নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ আগস্ট৷৷ রাজ্যের অর্থনীতিকে দ্বিগুণ করার ক্ষেত্রে বাঁশের অপরিসীম গুরুত্বের কথা উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন বাঁশের বহুবিধ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব৷ সেই লক্ষ্যে সরকার এবং বেশ কিছু বেসরকারি সংগঠন উদ্যোগী হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
শুক্রবার রাজধানীর প্রজ্ঞা ভবনে বাঁশের উৎপাদন এবং শিল্পায়নের সম্ভাবনা ও প্রতিকূলতা শীর্ষক এক দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়৷ এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন রাজ্যে বাঁশের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে৷ বর্তমান সময়ে প্রায় ২ লক্ষ হেক্টরের কাছাকাছি জমিতে বাঁশ চাষ হয়৷ বাঁশের উপকারিতার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন বাঁশ শুধু অর্থকরী ফসলই নয়, এর ফলে ৩৫ শতাংশ বেশি অক্সিজেনও উৎপন্ন হয়৷
এছাড়াও অন্যান্য গাছের তুলনায় বাঁশের বৃদ্ধি বেশি৷ ফলে অর্থনীতির প্রশ্ণে বাঁশের গুরুত্ব অপরিসীম৷ এদিন এ বিষয়টি উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, আমাদের বড় বন্ধু হওয়া উচিত বাঁশ৷ এর শিল্প সম্ভাবনা রয়েছে, এ বিষয়টিকে মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার বাঁশকে ঘাসের মান্যতা দিয়েছে৷ যার ফলে বন আইনের জটিলতা থেকেও বাইরে রাখা হয়েছে বাঁশকে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন বাঁশের ব্যবহার বহুবিধ৷ সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাঁশের উৎপাদন বাড়িয়ে বাজারজাতকরণের উপর গুরুত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ত্রিপুরা জাইকা প্রকল্প, বনদপ্তর, শিল্প ও বানিজ্য দপ্তর, টিআইডিসি সহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বলে জানান৷ এছাড়া এদিন জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে নদীর পাড়ে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান৷ বলেন জাইকা একটি বড় প্রকল্প এর সুফল, ত্রিপুরার মানুষ বাশ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও যাতে পেতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে৷ র সফল বাস্তবায়নে জাপানও যাতে সন্তুষ্ট হতে পারে সেই বিষয়টিও নজরে রাখার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ এছাড়া বলেন ন্যাশানাল ব্যাম্বু প্রজেক্টে কেন্দ্রীয় সরকার বাঁশ চাষিদের ঋণের উপর ৬০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে৷ এটা যাতে গ্রামের মানুষ জানে সেই ব্যবস্থা করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী বলেন৷ ত্রিপুরা সরকার ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বাঁশ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা আরো বড় মাত্রায় হওয়া উচিত৷ কারণ শুধু স্থানীয় আয়ই নয়, এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রাও রাজ্যে আসতে পারে৷ যার মাধ্যমে রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব৷ নীতি আয়োগ এর প্রথম বৈঠকে ত্রিপুরার অর্থনৈতিক স্থিতি আট হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা করার জন্য বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷
এই লক্ষ্য পূরনে বাঁশ একটি বড় ধরনের মাধ্যম হতে পারে পরে৷ এদিন মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন ত্রিপুরার ৬২ বনভূমি এর মধ্যে মাত্র ২ লক্ষ হেক্টর জমিতে বাঁশ চাষ হয়৷ মানুষকে বাঁশ চাষের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ এছাড়া জল সংরক্ষণ নিয়েও কথা বলেন শ্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন জাইকা প্রকল্পে রাজ্যে ১৪৭৭টি চেকড্যাম বানানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এছাড়া গ্রাম উন্নয়ন ও কৃষি উদ্যান দপ্তরের উদ্যোগে আরো ৩৩২ টি তৈরি করা হয়েছে৷ এর মাধ্যমে জল সংরক্ষণ করার পাশাপাশি পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন বর্তমান সময়ে গর বৃষ্টিপাতের চাইতেও ৪৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়৷ কিন্তু পাহাড়ি এলাকায় পানীয় জলের অভাব প্রায় প্রতি বছরের৷ এর থেকে উত্তরণের জন্য চেক ড্যাম তৈরি করার ওপর গুরুত্ব দেন বিপ্লব কুমার দেব৷ এদিন কর্মশালায় কৃষকের বাড়ি থেকেই উৎপাদিত বাঁশ ও বাঁশজাত সামগ্রী বাজারজাত করার ওপর গুরুত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এই লক্ষ্যে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান৷ বলেন ত্রিপুরাকে উন্নত করতে হলে রাজ্যের ঝিমিয়ে পড়া কর্মসংসৃকতিকে ফিরিয়ে আনতে হবে৷ সবকিছু সরকার নির্ভর নে হয়ে বেসরকারী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রাজ্যের উন্নয়নকে সুনিশ্চিত করার প্রশ্ণে কর্মসংসৃকতি ফিরিয়ে আনার উপর এদিন মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেন৷ তিনি বলেন রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে ত্রিপুরাকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে৷বনদপ্তর এর উদ্যোগে ত্রিপুরা জাইকা প্রজেক্ট এর ব্যবস্থাপনায় শিল্প ও বাণিজ্য দফতরের সহযোগিতায় একদিনের এই কর্মশালা আয়োজিত হয় রাজধানীর প্রজ্ঞা ভবনে৷ এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বন মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, জাইকা প্রকল্পের জাপান থেকে আগত প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক আধিকারিকরা৷