জগন্নাথ হলেন দুনিয়ার ভগবান জগতের নাথ রথযাত্রার অনুষ্ঠানে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ জুলাই ৷৷ জগন্নাথ হচ্ছেন দুনিয়ার ভগবান, জগতের নাথ৷ আজকের এই পুণ্য দিনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মপ্রাণ মানুষ একত্রিত হয়ে রথযাত্রায় অংশ নেন এবং আশির্বাদ কামনা করেন৷ আজ আগরতলাস্থিত ইসকন আয়োজিত আগরতলা রথযাত্রার সূচনা করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ এদিকে, দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার মহকুমার বাইখোড়ায় রথযাত্রা উৎসবের সূচনা করে উপ-মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভগবান জগন্নাথদেব অন্য দেবদেবীর তুলনায় ব্যক্তিক্রমী৷ কারণ, ভক্তেরা ভগবানের কাছে যান, কিন্তু জগন্নাথ দেব ভাই-বোনকে সাথে নিয়ে মাসীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাস্তায় বের হন৷


এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোন এক সময় ভারতীয় রাষ্ট্রবাদ, কৃষ্টি, সংসৃকতিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হতো৷ কিন্তু বর্তমানে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে৷ ভগবানের সর্বশ্রেষ্ট সৃষ্টি হচ্ছে মানুষ৷ এই মানুষই সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই রথযাত্রা অনেক দেশেই সাড়ম্বরে পালিত হয়৷ ভারতবর্ষের পুরীতে লক্ষ লক্ষ ভক্তদের সমাগম ঘটে৷ ত্রিপুরাতে আগরতলা, মেলাঘর, উদয়পুর সহ বিভিন্ন প্রান্তে রথযাত্রা সাড়ম্বরে আয়োজন করা হয়৷


মুখ্যমন্ত্রী আজ বলেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়েছে ১৫ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে৷ সরকারের দায়িত্ব ৩৭ লক্ষ ত্রিপুরাবাসীর খাদ্য, রোজগার, পরিকাঠামো সহ সার্বিক দিকগুলির ব্যবস্থা করা৷ তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে রাজধর্ম পালন করতে হয়৷ রাজধর্মের মূল মন্ত্রই হচ্ছে সবকা সাথ সবকা বিকাশ৷ তাই রথযাত্রার এই পূণ্য দিনে মুখ্যমন্ত্রী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য আশির্বাদ কামনা করেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী একটি স্মরনিকার আবরণ উন্মোচন করেন৷


অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর রথযাত্রা উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী স্ত্রীক জগন্নাথ, বলরাম এবং সুুভদ্রার পুজার্চনা করেন এবং রথ টেনে রথযাত্রার শুভারম্ভ করেন৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিধায়ক ডা অতুল দেববর্মা, ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়, আগরতলার ইসকনের আ’লিক সম্পাদক শ্রীদাম গোবিন্দ দাস, সমাজসেবী দীপক কর৷ এই রথযাত্রার ৩টি সুুবিশাল সুুসজ্জিত পৃথক রথে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে গুরুজী কনফারেন্স হলের সামনে এসে শেষ হয়৷ সেখান থেকে আগামী ১২ জলাই জগন্নাথ, বলরাম, সুুভদ্রা পুনরায় রথে চড়ে ইসকন মন্দিরে ফিরে আসবেন৷ আজকের এই অনুষ্ঠানে ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যনীয়৷


এদিকে, আজ বিকেল ৫টা নাগাদ দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তিরবাজার মহকুমায় বেিাখাড়ায় জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গন থেকে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রথযাত্রার শুভারম্ভ হয়৷ এই রথযাত্রার সূচনা করেন ত্রিপুরার উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা৷ এছাড়া এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ মন্দির ইস্কনের মহারাজ করুনেশ্বর মাধবদাস ব্রহ্মচারী, স্থানীয় বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং, শান্তিরবাজার মহকুমা শাসক অর্ঘ্য সাহা, শান্তিরবাজার পৌর পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান সত্যব্রত সাহাহ, বিএসএফ ৩১ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের কমানডেন্ট রাজীব কুমার প্রমুখ৷ এদিন প্রদীপ প্রজ্জ্বলের মধ্য দিয়ে রথযাত্রার শুভ সূচনা করেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা৷


এদিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ভগবান জগন্নাথদেব অন্য দেবদেবীর তুলনায় ব্যতিক্রমী৷ কারণ, তিনি নিজেই ভক্তদের দর্শন দিতে ভাই বলরাম ও বোন শুভদ্রাকে নিয়ে রাস্তায় বের হন৷ তাঁদের নিয়ে তিনি মাসির বাড়ি যান৷ উপ-মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ভগবান জনগন্নাথ হলেন ভক্তের দাস৷


এদিন উপ-মুখ্যমন্ত্রী ভক্তিগীতি এবং জগন্নাথ দেবের স্তুতি পাঠ করে সকলের শান্তি কামনা করেছেন৷ মন্দির থেকে রথ পর্যন্ত জগন্নাথদেবকে নিয়ে যেতে উপ-মুখ্যমন্ত্রীও অন্যদের কাধ মিলিয়েছেন৷ এরপর রাস্তায় ঝাড়ু দিয়ে পরিস্কার করে রথযাত্রার সূচনা করেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *