নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জুন৷৷ গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যম এবং সরকারের মধ্যে সুুষ্ঠ সমন্বয়পূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমেই গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে৷ তাহলেই আমরা এক শক্তিশালী ও শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়তে সক্ষম হবো৷ আজ আগরতলা প্রেস ক্লাবে ত্রিপুরা জার্নালিস্টস ইউনিয়ন এর বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, ত্রিপুরা জার্নালিস্টস ইউনিয়ন এর সভাপতি সৈয়দ সাজ্জাদ আলি, সাধারণ সম্পাদক প্রণব সরকার, বরিষ্ঠ সাংবাদিক সুুবল দে, মুখ্যমন্ত্রী জায়া নীতি দেব ও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সাংবাদিকগণ৷
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম সম্পর্কে তথ্য সংবাদ মাধ্যম তুলে ধরেছে, সেজন্য তিনি সংবাদ মাধ্যমকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন৷ তেমনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে কিছু কিছু সমস্যা সমাধানের বিষয়টিও সরকারের নজরে রয়েছে৷ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের এক্রেডিটেশনের যে বিষয়টি রয়েছে তা সরকার সমাধানের চেষ্টা করবে৷ তাছাড়া, প্রেস ক্লাবের মেরামতের জন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তিনি প্রেস ক্লাবে এ সি মেশিন বসানোর ব্যাপারটি দেখবেন বলেও আশ্বাস দেন৷ তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সংবাদ মাধ্যমে সরকারী কাজের দোষ ত্রটি তুলে ধরার পাশাপাশি বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ যাতে পরিবেশিত না হয় সে দিকেও সংবাদ মাধ্যম এবং সাংবাদিকদের নজর দিতে হবে৷ কাজের পর্যালোচনা ও রাজ্যের উন্নয়নের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নয়ন নীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত ’সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’৷ তিনি আশা প্রকাশ করেন সংবাদ মাধ্যমের সাথে মিলেমিশে কাজ করে ত্রিপুরাকে একদিন মেডিক্যাল হাব, আই টি হাব, এডুকেশন হাব, ইনফ্রাস্ট্রাকচার হাব হিসেবে গড়ে তোলা যাবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারী দপ্তরে যেমন কাজ এবং কর্ম সংস্ক’তির মূল্যায়ন হয় তেমনি সংবাদ সংস্থাগুলিতেও কাজের মূল্যায়ন করা প্রয়োজন৷ এতে যারা সংবাদ মাধ্যমে কাজ করছেন তাঁদেরই কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে৷ বিশেষ অতিথির ভাষণে শিক্ষা মন্ত্রী রতনলাল নাথ সংবাদ মাধ্যমের সাথে সরকারের সম্পর্ক, সরকারী তরফে সাংবাদিকদের কল্যাণে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাও তুলে ধরেন৷ তিনি বলেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সংবাদ মাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম এবং রাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথম চারটা স্তম্ভ মিলে মিশে কাজ করছে৷
সাংবাদিকদের ’জাতির কন্ঠসুুর’ বলে অভিহিত করে তিনি বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকতেও আহ্বান জানান এবং সংবাদ মাধ্যম থেকে গঠনমূলক সংবাদ পরিবেশন কাঙ্কিত বলে উল্লেখ করেন৷ সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই সরকার বড়জলা মৌজায় ১ একর জমি সাংবাদিকদের জন্য আবাসন তৈরীর উদ্দেশ্যে প্রদান করেছে৷ প্রেস ক্লাবের মেরামতির জন্যও সরকার উদ্যোগ নিয়েছে৷ সাংবাদিকদের দক্ষতার উন্নয়নে তথ্য ও সংস্ক’তি দপ্তর ও আই আই এম সি’র উদ্যোগে বিশেষ কর্মশালার উদ্যোগ নেওয়া হবে৷ বি’াপন নীতি, এক্রেডিটেশন রুলস-এর ব্যাপারেও উদ্যোগ জারি রয়েছে৷
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সরকার এবং বরিষ্ঠ সাংবাদিক সুুবল দে৷ প্রেস ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সরকার ত্রিপুরা জার্নালিস্ট ইউনিয়নের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট টেনে সাংবাদিকদের বর্তমান সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের কল্যাণে আরো বেশি সাহায্য পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন৷