নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ জুন ৷৷ ভূয়ো রেশন কার্ড বাজেয়াপ্ত করে যে অর্থ সাশ্রয় হয়েছে, তাতেই ফের গণবন্টন ব্যবস্থায় ডাল-চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে৷ বুধবার গণবন্টন ব্যবস্থায় চিনি সরবরাহ পুণরায় চালু উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ-কথা জোর গলায় বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর কথায়, স্বচ্ছতা থাকলেই মানুষের সেবা করা সম্ভব৷ তাই, রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে গণবন্টন ব্যবস্থাকে অন্তিম ব্যাক্তির কাছে পৌছানো গিয়েছে৷

প্রসঙ্গত, এখন থেকে প্রতি মাসে ১ কেজি চিনি কার্ড পিছু সরাবরাহ করা হবে৷ চলতি মাসে গত দুই মাসের সহ তিন কেজি করে চিনি সরবরাহ করা হবে৷ প্রতি কেজি ২৩ টাকা দরে চিনি পাওয়া যাবে রেশন শপে৷ আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দশ জন সুবিধাভোগীর হাতে তিন কেজি করে চিনি তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আজ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্প অন্তিম ব্যাক্তি পর্যন্ত পৌছানো সম্ভব, আগে মানুষ তা বিশ্বাসই করতেন না৷ কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কর্মপদ্ধতির মাধ্যমে অসম্ভব এখন সম্ভব হয়েছে৷ তাঁর কথায়, পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরি করে গিয়েছেন৷ অথচ, ৬২ হাজার ভূয়ো রেশন কার্ড কেন রেখে গেছেন তার জবাব এখনো পাওয়া যায়নি, কটাক্ষের সুরে বলেন তিনি৷ তাঁর দাবি, এখন সমস্ত কাজের হিসাব জনগণের কাছে উপলব্ধ হচ্ছে৷ কিন্তু, আগে হিসেব থাকত শুধু মুখ্যমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী এবং পার্টির কর্মকর্তাদের কাছে৷
বিপ্লব কুমার দেব দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে বলেন, মানুষের সেবা করার জন্য নতুন করে রাজস্ব আদায়ের প্রয়োজন হয় না৷ স্বচ্ছতা বজায় রাখলেই জনগণকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়৷ তাঁর কথায়, ৬২ হাজার ভূয়ো রেশন কার্ড বাজেয়াপ্ত করে বছরে ৬৩ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে৷ ওই টাকায় গণবন্টন ব্যবস্থায় ডাল সরবরাহ শুরু হয়েছে, এখন চিনিও দেওয়া হচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, আগামী দিনে সরিষার তেল দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে৷
তিনি বলেন, পরিকল্পনা দপ্তরের পর্যালোচনা বৈঠকে খাদ্য দপ্তরের সচিব প্রস্তাব দিয়েছেন আগামী বাজেটে ১৭০ কোটি টাকা কৃষক কল্যাণে বরাদ্দ করা হলে ১ লক্ষ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা সম্ভব হবে৷ তাতে, প্রচুর কৃষক উপকৃত হবেন৷ সে-বিষয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য সরকার, জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তাঁর বক্তব্য, সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর রাজ্যে কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে৷ শুরুতে এফসিআই ধান ক্রয় করলেও মিলের অভাবে তারা হাত গুটিয়ে নিয়েছে৷ তাই, এখন রাজ্য সরকারই ত্রিপুরার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ন্যুনতম সহায়ক মূল্যে ধান কিনছে৷ তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, পূর্বতন সরকার বছরে ৬০ কোটি টাকা হাফিজ করে ২৫ বছর ক্ষমতায় টিকেছে৷ কিন্তু, বিজেপি সরকার প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ করে কৃষকদের কাছ ধান ক্রয় করে ৫০ বছর ক্ষমতায় টিকে থাকবে৷ তাঁর কটাক্ষ, চুরির জোরে নয়, কৃষকের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকে মোদি সরকার৷

