নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ জুন ৷৷ দীর্ঘ পাঁচ বৎসর পর, রাজ্যে বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতারোহনের প্রায় দেড় বছরে ভূমি রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে৷ ১৯৬০ সালে কার্যকরী হওয়া ত্রিপুরা ভূমি রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার আইন ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনের নিরিখে সংশোধন করা হয়েছে৷ বিজেপি জোট সরকার ক্ষমতারোহনের পরেই ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অবসরপ্রাপ্ত আই এ এস স্বপন সাহাকে চেয়ারম্যান করে চার সদস্যের রিভিউ কমিটি গঠন করে এবং তিন মাসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়৷ সেই মোতাবেক কমিটি আজ ত্রিপুরা সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে৷

সংশোধনী অনুসারে খাস জমিতে নতুন করে জরিপ ও বন্দোবস্ত, ভূমিহীন-গৃহহীন এবং উভয়হীনদের সুযোগ সম্প্রসারণ, খাজনা বৃদ্ধি এবং প্রমোটারদের নির্মিত বহুতলের জমির মালিকানা নির্ধারণ সহ একাধিক বিষয় আইনে যুক্ত করা হচ্ছে৷ রাজস্বমন্ত্রী এন সি দেববর্মা জানিয়েছেন, ওই বিষয়গুলি ছাড়াও সংশোধনীতে রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক কিছু রাখা হয়েছে৷
আজ রাজস্ব দপ্তরের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ত্রিপুরা ভূমি রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার আইন ১৯৬০ সালে কার্যকরী হওয়ার পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনের নিরিখে রাজ্য সরকার দশবার আইনটির বিভিন্ন ধারার সংশোধন করেছে৷ এরপরও ত্রিপুরা রাজ্যের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, জমির শ্রেণী পরিবর্তন এবং অন্যান্য প্রয়োজনের নিরিখে আইনটিকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে আরও বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ, গ্রহণযোগ্য এবং জনকল্যাণমূলক করে তোলার জন্য বিভিন্ন ধারাগুলির সংশোধন করার প্রয়োজন অনুভব করে ত্রিপুরা সরকার৷ সেই মোতাবেক, রাজস্ব দপ্তর ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অবসরপ্রাপ্ত আই এ এস স্বপন সাহাকে চেয়ারম্যান করে চার সদস্যের রিভিউ কমিটি গঠন করে এবং তিন মাসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল৷
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, ওই রিভিউ কমিটি ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু করে৷ কমিটি কাজ করতে গিয়ে পার্শ্ববর্তী রাজ্য আসাম পরিদর্শনেও গিয়েছে এবং সেখানকার ভূমি রাজস্ব আইন সম্পর্কে সম্যক ধারনা গ্রহণ করার চেষ্টা করেছে৷ তাছাড়া রাজ্যের আটটি জেলা অফিসে জেলা আধিকারিকদের কাছ থেকেও তাদের মতামত নেওয়ার চেষ্টা করেছে৷ কমিটি আসাম রাজ্যের ভূমি আইন সম্পর্কে অর্জিত অভিজ্ঞতা, রাজ্যের বিভিন্ন জেলাশাসকদের কাছ থেকে গৃহীত মতামত এবং কমিটির সদস্যদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বর্তমান আইনের বিভিন্ন ধারাগুলিকে জনসাধারণের বর্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং জমির শ্রেণী পরিবর্তনের তথা জনসাধারণের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে সংশোধন করার চেষ্টা করেছে৷
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, রিভিউ কমিটি আজ সকালে ভূমিলেক্ষ্য ও বন্দোবস্ত জরীপ দপ্তরের কনফারেন্স হলে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তাদের প্রস্তাবিত প্রতিবেদন রাজ্য সরকারের রাজস্ব ও মৎস্য দপ্তরের মন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দিয়েছে৷ রাজস্ব মন্ত্রী কমিটির প্রস্তাবিত রিপোর্ট গ্রহণ করেন এবং কমিটির সকল সদস্যকে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য রাজস্ব দপ্তর এবং ত্রিপুরা সরকারের তরফ থেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন৷ রাজস্ব মন্ত্রী জানিয়েছেন, পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠকে রিপোর্টটি পেশ করা হবে৷

