নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ মার্চ৷৷ পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে সুবল ভৌমিককে৷ অন্যদিকে, পূর্ব ত্রিপুরা আসনে রাজকুমারী প্রজ্ঞা দেববর্মার নামে সিলমোহর দিয়ে দেয়৷ কয়েকদিন আগে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন সুবল ভৌমিক৷ মূলত বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি তীব্র অনাস্থা এবং বিষোদগার করেন যথাযথ সম্মান না দেওয়ার অভিযোগ এনে৷ ২০১৪ সালে যখন বিজেপির অবস্থা জিরো ছিল তখন সুবল ভৌমিক ওনার নিজের হাতে তৈরি গ্রামীণ কংগ্রেস নিয়ে বিজেপি দলে মিশে যান৷ সেই থেকে লাগাতর রাজ্যের অলিগলি চষে বেড়াচ্ছিলেন বিজেপিকে শক্তিশালী করার জন্য৷ যার সুফল হিসেবে ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং আইপিএফটির জোট ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে৷

দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মোতাবেক বিধানসভা নির্বাচনের দুই বছর আগে থেকেই তিনি বনমালীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির সংগঠন সাধারণের কাজ করছিলেন৷ কিন্তু ভোটের মুখে প্রদেশ সভাপতি বিপ্লব কুমার দেব এই আসনে দাবিদার হয়ে গেলেন৷ যথারীতি সভাপতির পছন্দের আসনেই তাকে টিকিটও দেওয়া হয়৷ সুবল ভৌমিককে প্রার্থী করা হয় সোনামুড়া কেন্দ্রে৷ তিনি প্রার্থী হতে রাজি ছিলেন না৷ পরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ওনাকে ডেকে পাঠিয়ে সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেছিল তিনি যদি ভোটে অসফলও হন তাহলে যথেষ্ট সম্মান দেওয়া হবে৷ কিন্তু সরকার গঠনের পর সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি বিজেপি৷ এমনকি আরএসএস ঘরানার পক্ষ থেকে পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্রে সুবল ভৌমিককে প্রার্থী করার সুপারিশ করা হলেও প্রদেশ সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের অনুগামীরা তা মোটেই মেনে নেননি৷ তারা পছন্দের প্রার্থী হিসেবে সুবল ভৌমিকে নাম ছেটে দিয়ে প্রতিমা ভৌমিকের নাম প্রস্তাব করেন৷ এই ধরনের অসম্মানে ক্ষুব্ধ সুবল ভৌমিক প্রার্থী ঘোষণার আগেই কংগ্রেসে যোগ দেন৷ বিজেপি দলে বড় ধরনের ধাক্কা এটা৷ অন্যদিকে পিসিসি সভাপতি মহারাজ প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ তখনই ঠিক করলেন পশ্চিম ত্রিপুরা কেন্দ্রে কংগ্রেসের যোগ্য প্রার্থী হবেন সুবল ভৌমিক৷ আজ কংগ্রেসের স্ক্রুটিনি কমিটি পশ্চিম ত্রিপুরা কেন্দ্রে সুবল ভৌমিক এবং পূর্ব ত্রিপুরা আসনে রাজকুমারী প্রজ্ঞা দেববর্মার নামে সিলমোহর দিয়ে দেয়৷ যদিও এআইসিসির নেতৃত্ব চাইছিল মহারাজ নিজেই যেন প্রার্থী হন পূর্ব ত্রিপুরা আসনে৷ যেহেতু তিনি কয়েকদিন আগে সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন তাই তিনি ভোটে লড়াই করার বদলে কংগ্রেস প্রার্থীদের হয়ে রাজ্যে চষে বেরানোর কৌশল নিয়ে ওনার বদলে দাবি করেছিলেন রাজমাতা বিভু কুমারী দেবীকে প্রার্থী করার জন্য৷ কিন্তু রাজমাতার বয়স হয়ে গেছে তাই তিনি পূর্ব ত্রিপুরা লোকসভা কেন্দ্র ধর্মনগর থেকে সাব্রুম পর্যন্ত চষে বেড়াতে পারবেন না৷ এই হিসেব করে রাজকুমারী প্রজ্ঞা দেববর্মা অর্থাৎ পিসিসি সভাপতির বোনকে এআইসিসি পূর্ব ত্রিপুরা আসনের জন্য প্রার্থী করেছে৷ এআইসি সূত্রে জানা গেছে, যে কোন সময় সরকারিভাবে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা দিয়ে দেওয়া হবে৷