BRAKING NEWS

চকবাজার অগ্নিকান্ড : দেহ টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি হচ্ছে

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): পুরনো ঢাকার চকবাজারে চুড়িহাট্টায় অগ্নিকান্ডে কতজন মারা গেছেন ? নানা রকম সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্যে। তবে শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি মোটামুটি বোঝা গেল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে। গতকাল দুপুরের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ফায়ার সার্ভিসের কয়েকজন কর্মকর্তা পালাক্রমে এখানে দায়িত্ব পালন করছেন। তারাই বললেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া দেহগুলো নিয়ে তারা নিজেরাই হিসেব মেলাতে পারেননি। মরদেহগুলো মর্গে নেয়ার সময় ব্যাগে ভরা হয়, মরদেহের কোনাটার মাথাসহ ওপরের অংশ পাওয়া গেলেও দেহের নিচের অংশ পাওয়া যায়নি। আবার কোথাও নিচের অংশ বা দেহের একাংশ পাওয়া যায়। তারা আরও বলেন, বিস্ফোরণ ও আগুনে পুড়ে কোনো কোনো দেহ টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। বিভৎসতার মুখে দাঁড়িয়ে তারা নিজেরাই শোকাভিভুত হয়ে পড়েন। পুড়ে বহু দেহ ‘অঙ্গার’ হয়ে গেছে। এ কারণে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই বললেন, নিহতের সংখ্যা একশো ছাড়িয়ে গেলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।


সকালে ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে দেখা গেল, এখনো অনেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সন্ধান করছেন। তারা বলছেন, সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না অনেকের। ২০১০ সালের ৩ জুন চকবাজার থেকে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে পুরনো ঢাকারই আরেক ঘিঞ্জি এলাকা নিমতলীতে এরকমই এক বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডে সরকারি হিসেবে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, অগ্নিকান্ডের পর অনেকে নিখোঁজ ছিলেন। আত্মীয়-স্বজনরা খোঁজাখুজির পর হাল ছেড়ে দেন। সেই একই অভিযোগ পাওয়া গেল আজ ।দুই অগ্নিকান্ডের কারণ কিন্তু এক, রাসায়নিক। নিমতলীতে রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণের পর আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়েছিল। এবারও আগুনের সূত্রপাত বলা হচ্ছে, রাসায়নিক ও গ্যাস সিলিন্ডার। এখন আলোচনায় উঠে এসেছে, নিমতলীর অগ্নিকান্ডের পর রাসায়নিক গুদাম সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

কিন্তু আট বছর পেরিয়ে গেলেও সেই সিদ্ধান্ত আলোর মুখ দেখেনি। চকবাজারের ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে অভিযোগ শুনতে হলো স্থানীয় মানুষদের, নিমতলীর ঘটনার পর সরকারকে যেভাবে ‘সিরিয়াস’মনে হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে তা গুরুত্বহীন হয়ে যায়। অর্থাৎ সোজাসাপ্টা ভাষায়, নিমতলীর ঘটনা থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়নি। যদি শিক্ষা নিত চকবাজারের এই ভয়াবহতার মুখোমুখি দাঁড়াতে হতো না। এখন ঢাকার মেয়র থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী সবাই বলেছেন, রাসায়নিকের ব্যবসা পুরনো ঢাকায় হবে না। গুদাম থাকবে না এখানে। সব স্থানান্তরিত হবে প্রস্তাবিত রাসায়নিক পল্লীতে। সবচেয়ে বড় কথা বলেছেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতু ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আমাদের যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। আর ভুল হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *