কৈলাসহর ও মোহনপুরে গৃহবধূ খুন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৩ ফেব্রুয়ারী৷৷ পর পুরুষের সাথে আপত্তিজনক অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করল স্বামী৷ চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কৈলাসহরে হালইছড়ায়৷ মৃতার নাম অঞ্জলী মুন্ডা৷ বয়স চবিবশ৷ অভিযুক্ত স্বামীর নাম শুক্র মুন্ডা৷


সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে অঞ্জলী ও শুক্র এর বিয়ে হয়৷ বর্তমানে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে৷ হত্যাকান্ডের খবর পয়ে কৈলাসহর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে৷ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ৷ ধৃত শুক্র মুন্ডা জানিয়েছে, তার স্ত্রী অঞ্জলী পরকীয়া করত৷ পর পুরুষের সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত ছিল৷ প্রায়শই পর পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে৷ এনিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চলত৷ সাংসারিক অশান্তি লেগেই থাকত৷ বুধবার স্ত্রী অঞ্জলীকে অন্য এক ব্যক্তির সাথে আপত্তিজনক অবস্থায় দেখে ফেলেন স্বামী শুক্র মুন্ডা৷ তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তিনি৷

স্ত্রীকে মারধর করতে থাকেন৷ একসময় স্ত্রী লাঠি নিয়ে স্বামীর উপর আক্রমণ করে৷ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়৷ রাগের বশে স্বামী শুক্র মুন্ডা স্ত্রীকে গলায় ও মুখে শাড়ি দিয়ে চেপে ধরে৷ তাতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়ে ফেলে স্ত্রী অঞ্জলী৷ পরে আশেপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়৷ পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে৷ এদিকে, অঞ্জলী মুন্ডার বোন অভিযোগ করেছেন, শুক্র মুন্ডা মনগড়া কাহিনী পুলিশকে বলেছে৷ এমন কোন ঘটনাই নয়৷ পরিকল্পিতভাবে অঞ্জলীকে খুন করা হয়েছে৷ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে৷ জানা গিয়েছে, মৃতার বাপের বাড়ি আসামে৷ এই হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷


গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পুলিশ এখনও ধন্দে রয়েছে৷ এটা কি খুন না আত্মহত্যা, এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছে না পুলিশ৷ যদিও এলাকাবাসীরা কিছুতেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলতে নারাজ৷ তাঁদের মতে, এটি একটি পরিকল্পিত খুন৷ তবে মৃতার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বক্তব্য, এটি একটি আত্মহত্যা৷ অবশ্য মৃতার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আত্মহত্যার পেছনে কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারেননি৷ যার দরুন সকলের মনে আরও বেশি করে সন্দেহ দানা বাঁধছে৷
এলাকাবাসীদের মতে, ঘরে স্বামী, সন্তান থাকা সত্বেও কী করে গৃহবধূ আত্মহত্যা করলেন৷ এদিকে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে৷ জানা গেছে, ইতিমধ্যে পুলিশ মহিলার পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসীদের প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷ প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীর সাথে অশান্তির কারণেই মহিলার মৃত্যু হয়েছে৷ অতিসত্বর মহিলার মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করবেন বলে দাবি করেছেন পুলিশের তদন্তকারী অফিসার৷


ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সিমনা শশানটিলা গ্রামের গৃহবধূ তথা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ৩০ বছর বয়সি শিক্ষিকা খুকুরানি মজুমদারের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়৷ জানা গেছে, গভীর রাতে নিজের ঘরে মহিলাকে ফাঁসিতে ঝুলে থাকতে দেখেন তাঁর পরিবারের লোকজন৷ অবাক করার বিষয়, পুলিশ আসার আগেই পরিবারের লোকেরা ফাঁসির দড়ি খুলে মৃতদেহ নীচে নামিয়ে আনেন৷ পরে পুলিশ এসে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়৷ যদিও বিষয়টিকে এলাকাবাসীরা আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে পারেননি৷ জানা গেছে, মহিলার দুটি সন্তান আছে৷ স্বামী একটি ইটভাট্টায় ম্যানেজারের কাজ করেন৷ এলাকাবাসীদের দাবি অতিসত্বর মহিলার মৃত্যুর সাথে জড়িতদের পুলিশ গ্রেফতার করে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *