নিজস্ব প্রতিনিধি, কমলপুর, ১৫ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে তাদের উৎপাদিত ধান কোন শুরু করল ভারতীয় খাদ্য নিগম (এফসিআই)৷ আজ কমলপুর টাউন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ এই ঐতিহাসিক অনষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব, বিধায়ক আশিস দাস,দ্বস বিধায়ক পরিমল দেববর্মা, এফ সি আই-র নর্থ ইস্ট জোনের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর আশুতোষ কুমার সিনহা, খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা দপ্তরের সচিব দেবাশিস বসু, ধলাই জেলার জেলাশাসক বিকাশ সিং প্রমুখ৷
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ৷ দেশের মেরুদণ্ডই হচ্ছে কৃষকরা৷ তাদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য দেশের বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার নানা প্রকল্প হাতে নিয়েছে৷ রাজ্যের বর্তমানসরকারও কৃষকদের আথিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য তাদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টার ১৭৫০ টাকা দরে এফসিআই যাতে ধান কেনে তার উদ্যোগ নিয়েছে৷ এতে এই রাজ্যের কৃষকরা দারুণভাবে লাভবান হবেন৷ এই সুযোগ যথাযথভাবে কাজে লাগানোর জন্য এক ইঞ্চি জমিও খালি না রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার রাজ্যের জনগণের উননয়নে বদ্ধ পরিকর৷ এইজন্য নেওয়া হচ্ছে একের পর এক উদ্যোগ৷ তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরার পরিকাঠামো সর্বোৎকৃষ্ট জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে৷ নারী নির্যাতন মুক্ত এবং নেশার কবল মুক্ত ত্রিপুরা গঠন করা রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ্য৷ তিনি বলেন, ৯ মাসের মধ্যে সরকার রাজ্যের সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পেরেে? এরফলে অপরাধীদের বিচারের হার আগের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে৷ মহিলা নির্যাতনের হারও কমেছে৷ তেমনি হ্রাস পেয়েছে ধর্ষণের হারও৷ ৩৭ লক্ষ ত্রিপুরাবাসীর সহযোগিতায় স্বরোজগারী, বৈভবশালী ত্রিপুরা গঠন করা যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন৷ অনষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষি মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে৷ রাজ্য সরকারও এই লক্ষ্যে কাজ করছে৷ রাজ্যের পূর্বতন সরকার কৃষি কাজের উন্নতি এবং সেই সঙ্গে কৃষকদের অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী করতে পারেনি৷ কৃষকদের উৎপাদিত ফসলেরও বাজারজাত করণের জন্য কোন উদ্যোগ নেয়নি৷ বর্তমান সরকার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়ায় রাজে্যর আনারস দেশের গান্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বাজারজাত হচ্ছে৷ ধান কিনছে এফসিআই৷ তিনি বলেন, কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে শক্তিশালী করার জন্য রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে খাদ্য মন্ত্রী মনোজ কান্তি দেব বলেন, বিগত সরকার তাদের ধীর্ঘ দিনের শাসনে যা করতে পারেনি বর্তমান সরকার মাত্র ৯ মাসে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত রূপায়ণ করছে৷ তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কমলপুর শহরকে স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে৷ দলমত নির্বিশেষে সব অংশের মানুষ বিভিন্ন পরিষেবার সুযোগ যাতে পেতে পারেন সেই লক্ষ্যে বর্তমান রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে খাদ্য দপ্তরের সচিব দেবাশীষ বসু বলেন, আগামী ২ মাসে রাজ্যের ১০ কেন্দ্র থেকে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া চাষীদের কাছ থেকে ধান কিনবে৷ প্রথম পর্যায়ে এফ সি আই ৩০ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনবে৷ অনুষ্ঠানে ধান বিক্রির জন্যে পাঁচজন কৃষকের হাতে প্রতিকী চেক প্রদান করা হয়৷
2018-12-16