বিরোধীদের আপত্তিকে খারিজ করে সড়ক উন্নয়নে সেস ও ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট বিল বিধানসভায় পাশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ নভেম্বর৷৷ সড়ক উন্নয়ন সেস এবং ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট এই দুটি বিল নিয়ে বিধানসভা অধিবেশনে বিরোধীরা আপত্তি জানিয়েছেন৷ সড়ক উন্নয়ন সেস মানুষের ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপাবে এবং ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে বলে অভিযোগ করেন বিধায়ক বাদল চৌধুরী৷ এই অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়ে রাজ্য সরকারের দাবি আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে এবং অসাধু চিকিৎসা ব্যবসায়ীদের পায়ে বেড়ি পড়ানোর জন্যই এই দুটি বিল আনা হয়েছে৷ কিন্তু, বিরোধীরা তাতে আশ্বস্ত হননি৷ ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট’র একটি উপধারা প্রত্যাহারের দাবিতে এদিন বিরোধীরা বিধানসভা অধিবেশন ওয়াক আউট করেন৷

বিধানসভায় আজ পাঁচটি বিল ধবনিভোটে পাশ হয়েছে৷ আধার সংক্রান্ত বিল, জিএসটি সংশোধনী বিল এবং আবগারী শুল্ক সংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধী কোন আপত্তি করেননি৷ কিন্তু, সড়ক উন্নয়ন সেস বিল এবং ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিস্টমেন্ট বিল নিয়ে এদিন বিরোধীরা আপত্তি জানিয়েছেন৷ সড়ক উন্নয়ন সেস বিল বিরোধী বিধায়ক বাদল চৌধুরী বলেন, এই বিল রাজ্যবাসীর ঘাড়ে অতিরিক্ত বোঝা চাপাবে৷ রাজ্যের ইতিহাসে কখনোই এমন কোন আইন প্রনয়ণ হয়নি৷ তিনি এই বিল প্রত্যাহারের দাবি জানান৷ তাতে, অর্থমন্ত্রী তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিল সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা না নিয়েই বিরোধীরা এর বিরোধীতা করছেন৷ এই বিলে কোথাও সাধারণ মানুষের করের বোঝা চাপানোর কথা বলা হয়নি৷ আইওসিএল, ওএনজিসি সংস্থাগুলি এই সেস প্রদান করবে৷ তাতে, রাজ্যের আয় বাড়বে৷ আর্থিকভাবে রাজ্যকে স্বচ্ছল করার জন্য এই পদক্ষেপে খুবই জরুরী বলে মনে করে রাজ্য সরকার৷ তাই সড়ক উন্নয়ন সেস বিল আনা হয়েছে৷ বিরোধীদের আপত্তির মাঝেই উপাধ্যক্ষ বিলটি ভোটে দেন এবং ধবনিভোটে বিলটি পাশ হয়ে যায়৷

এদিকে, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট বিল নিয়েও বিরোধীরা আপত্তি জানান৷ এই বিলের শুধুমাত্র একটি ধারা প্রত্যাহার করার জন্য বিধায়ক বাদল চৌধুরী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান৷ তিনি বলেন, এই বিলে ২৭ নং ধারা ১ উপধারায় কোন সরকারী আধিকারীকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো কিংবা মামলা করার ব্যবস্থা রাখা হয়নি৷ ফলে, যদি কোন দোকানদার মনে করেন তার সাথে অন্যায় হচ্ছে তবুও তিনি মামলা করতে পারবেন না৷ তিনি বলেন, এর ফলে দূর্নীতির রাস্তা খুলে যাবে৷ কিন্তু, বিরোধীদের এই দাবি পত্রপাঠ খারিজ করে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মন৷ তিনি বলেন, এতকাল শুধু বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আইনের অধীনে ছিল৷ এখন সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকেও এর অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে৷ মূলত, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যই এই বিল আনা হয়েছে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য ওকালতি করছেন বাদলবাবু৷ তিনি বিরোধীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ণ ছুড়ে দিয়ে বলেন, বামফ্রন্ট সরকার কেন ১৯৭৬ সালের আইনে এতদিন কোনও সংশোধনী আনেনি৷

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এদিন ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট অ্যাক্ট বিলের গুরুত্ব বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করলেও বিরোধীরা তাঁর বক্তব্য মানতে রাজী হননি৷ তাঁরা বারবার বিলের উপধারাটি প্রত্যাহারের দাবিতে অনঢ় থাকেন৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বিলে কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন৷ তাতে, এই বিলের বিরোধীতায় বিরোধীরা বিধানসভা অধিবেশন ওয়াক আউট করেন৷ এরপর উপাধ্যক্ষ বিলটি ভোটে দেন এবং ধবনিভোটে বিলটি পাশ হয়ে যায়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *