নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ নভেম্বর৷৷ শিক্ষায় লালিকরণের জন্য বিধানসভায় পূর্বতন সরকারকে তুলোধূনো করেছেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ৷ তথ্য তুলে ধরে তিনি দাবি করেন, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধবংস করে দেওয়ার পিছনে পূর্বতন সরকারের শিক্ষায় লালিকরণের উদ্দেশ্যই দায়ি৷ তাই, বর্তমান রাজ্য সরকার আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এনসিইআরটির সিলেবাস চালু করতে চলেছে৷ কারণ, শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকার৷
এদিন বিধানসভায় মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায় প্রশ্ণপত্রে বিজেপিকে নিয়ে টিকা প্রসঙ্গে জানতে চেয়েছেন৷ তৎক্ষনাৎ শিক্ষামন্ত্রী এর জবাব দিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, প্রশ্ণপত্রে বিজেপিকে নিয়ে টিকা লেখার খবরটি জানার পর আশ্চর্য্য হয়েছি৷ সঙ্গে সঙ্গে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি৷ কিন্তু, খবর নিয়ে আক্কেল গুড়ুম হয়ে গেছে৷ পূর্বতন সরকারের আমলে অনুমোদিত সিলেবাসে নির্বাচনী রাজনীতির বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত ছিল৷ তাতে, কংগ্রেস, সিপিএম, সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক, বিজেপি সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ ছিল৷ সেই জন্যই পরীক্ষায় প্রশ্ণপত্রে বিজেপি সম্পর্কে টিকা এসেছিল৷ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ওই শিক্ষককে পুরস্কার দেওয়া উচিত৷ পাঠ্য পুস্তকে কোনও বিষয় উল্লেখ থাকলে তা প্রশ্ণপত্রে আসবেই৷ শিক্ষামন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, পূর্বতন সরকারের অনুমোদিত পাঠ্য পুস্তকে নির্বাচনী রিগিং, বুথ দখল ইত্যাদি বিষয়গুলিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে৷ ছাত্র-ছাত্রীদের তা পড়ানো হচ্ছে৷ তাই, আমি মনে করি প্রশ্ণপত্রে বিজেপিকে নিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য শিক্ষক কিংবা বিদ্যালয় কোনও ভূল করেনি৷
এদিন তিনি সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরকে নিশানা করে বলেন, কোনও বিষয়ে খবর না নিয়ে মন্তব্য করলে দল সম্পর্কে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়৷ অন্তত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করলেই ভূল মন্তব্য করা থেকে নিজেকে এড়াতে পারতেন৷ তাঁর কটাক্ষ্য, শিক্ষায় লালিকরণের উদ্দেশ্যেই এ ধরনের সিলেবাস তৈরি করা হয়েছিল৷ পূর্বতন সরকারের আমলে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের লেখা বই বিদ্যালয়গুলিকে ক্রয় করতে বলা হয়েছিল৷ পাঠ্য পুস্তকে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রথম স্থানে রয়েছে বামফ্রন্ট এবং এরপরই রয়েছে কংগ্রেস৷ শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, বামফ্রন্ট কোনও রাজনৈতিক দল নয়৷ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের যুক্ত ফ্রন্ট মাত্র৷ তিনি আরও বলেন, পূবর্তন সরকারের অনুমোদিত পাঠ্য পুস্তকে প্রচুর ভূল তথ্য রয়েছে৷ ফলে, ছাত্র-ছাত্রীরা ভুল শিক্ষা অর্জন করছে৷ তার দাবি, শিক্ষায় এতদিন পরিকল্পিত ভাবে লালিকরণ হয়েছে৷ কিন্তু, বর্তমান রাজ্য সরকার দীর্ঘদিনের অব্যবস্থা দুর করতে চেষ্টা চালিয়েছে৷ শিক্ষা মন্ত্রী জানান, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই নতুন সিলেবাস চালু হচ্ছে৷ প্রথম থেকে নবম শ্রেণী এবং একাদশ শ্রেণীর জন্য এনসিইআরটির সিলেবাস আগামী শিক্ষাবর্ষেই শুরু হচ্ছে৷ তাঁর দাবি, শিক্ষায় ৩ বছরে রাজ্যকে জাতীয় স্তরে পৌছানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে৷