শ্রীনগর, ১৭ নভেম্বর (হি.স.): কড়া নিরাপত্তা মধ্যে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হল পঞ্চায়েত নির্বাচন। পঞ্চায়েত নির্বাচন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য প্রচুর
নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল| শনিবার সকাল আটটা থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে শুরু হয়েছে প্রথম দফার পঞ্চায়েত নির্বাচন, ভোটগ্রহণ চলবে দুপুর দু’টো পর্যন্ত| প্রথম দফার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জম্মুতে ভোট পড়েছে ৭৯.৫ শতাংশ এবং কাশ্মীরে ভোট পড়েছে ৬৪.৫ শতাংশ। মাত্রাতিরিক্ত ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করেই সকাল সকাল ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন কাশ্মীর উপত্যকার মানুষজন| তবে, কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় জম্মু রিজিওনে ভোটারদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি| কড়া নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণ হয়েছে শ্রীনগর, রাজৌরি, গান্ডেরবাল, বদগাম, উরি এবং উধমপুর-সহ জম্মু ও কাশ্মীরের ১৫টি জেলায়| এদিন বিচ্ছন্নতাবাদী সংগঠন জয়েন্ট রেসিস্টেন্স লিডারশিপের তরফ থেকে কাশ্মীরে বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2013/12/JK-300x230.jpg)
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, ১৫টি জেলার মধ্যে সাতটি জেলা জম্মু রিজিওনে, ছ’টি জেলা কাশ্মীর উপত্যকায় এবং দু’টি জেলা লাদাখে| ১৫টি জেলায় সর্বমোট পোলিং স্টেশনের সংখ্যা হল ৩,২৯৬টি| এর মধ্যে জম্মু রিজিওনে ১,৯৯৩টি এবং কাশ্মীর উপত্যকায় ১,৩০৩টি পোলিং বুথ রয়েছে| দুপুর বারোটা পর্যন্ত ভোটের শতাংশ-জম্মু রিজিওনের ডোডা (৬০.১ শতাংশ), রামবান (৬৯.৪ শতাংশ), রাজৌরি (৬২.৯ শতাংশ), কিশত্বর (৫৪.৭ শতাংশ), কাথুয়া (৬২.৯ শতাংশ), উধমপুর (৫০.৯ শতাংশ), পুঞ্চ (৫০ শতাংশ)| পাশাপাশি কাশ্মীর উপত্যকায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভোট পড়েছে বারামুল্লা (৩৬.৫ শতাংশ), কুপওয়ারা (৩৫.২ শতাংশ), বান্দিপোরা (৪২ শতাংশ), গান্ডেরবাল (৯.৭ শতাংশ), বদগাম (১১.৯ শতাংশ), হান্দওয়ারা (২৮ শতাংশ), শ্রীনগর (১৯ শতাংশ)| এছাড়াও লাদাখের লেহ এবং কার্গিল জেলায়ও ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে| লেহ-তে বারোটা পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২৩.৬ শতাংশ এবং কার্গিলে ১৪.৬ শতাংশ|
এই নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বানচাল করতে কাশ্মীরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিরোধিতা করে শনিবার বনধের ডাক দিয়েছে বিচ্ছন্নতাবাদী সংগঠন জয়েন্ট রেসিস্টেন্স লিডারশিপ। তার জেরে জনজীবন ব্যাহত হয়েছে উপত্যকায়। এদিন জম্মু ও কাশ্মীরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ ছিল। কড়া নজরদারির মধ্যে প্রথম দফার ভোটগ্রহণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টো পর্যন্ত। এই নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে বনধের ডাক দেয় জয়েন্ট রেসিস্টেন্স লিডারশিপের সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মীরওয়াজ মৌলবি, ওমর ফারুক এবং মহম্মদ ইয়াসিন মালিক। সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার জন্য জনগণের কাছে আবেদন করেন তারা।
বনধের জেরে শ্রীনগরের ব্যবসায়িক কেন্দ্র ঐতিহাসিক লাল চক, বাদশা চক, রিগ্যাল চক, মাইসুমা, হরি সিং হাইস্ট্রিট, বাটমালু, মৌলবি আজাদ রোড, রেসিডেন্সি রোড এবং ডালগেটে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ ছিল। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পরিমাণে নিরাপত্তা বাহিনী। দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম, পুলওয়ামা, অনন্তনাগ, সোপিয়ানেও জনজীবন ব্যাহত। মধ্য কাশ্মীরের বাদগাম, গান্ধ্রেবলের রাস্তাঘাট ফাঁকা ছিল। কোনও যান চলাচল দেখা যায়নি। যদিও শ্রীনগরে কয়েকটি গাড়ি চলতে দেখা যায়। শহরের ঐতিহাসিক জামা মসজিদ এদিন বন্ধ ছিল।
কাশ্মীর উপত্যকায় এদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। যাত্রীদের নিরাপত্তা কঠা ভেবেই এদিন ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল দফতর। ফলে চূড়ান্ত দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে নিত্য যাত্রীদের। শ্রীনগর-বাদগাম থেকে উত্তর কাশ্মীরের বারামুলার পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বাদগাম-শ্রীনগর-অনন্তনাগ-দক্ষিণ কাশ্মীরের কাজিগণ্ড থেকে জম্মুর বানিহাল পর্যন্ত কোনও ট্রেন চলেনি।