নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৪ নভেম্বর৷৷ পালাটানা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের শেয়ার কেনার বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে৷ তবে, শেয়ার কিনলে ঝঁুকিও থাকে, সে বিষয়ে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছেন তিনি৷ তাঁর বক্তব্য, দেশীয় বাজারে বিদ্যুতের দামে পতন ঘটলে লোকসানের ভাগিদার রাজ্য সরকারকেও হতে হবে৷ পাশাপাশি, পূর্বতন সরকার মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হলেও পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১০ শতাংশ ক্রয় করেনি, শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথের এই বক্তব্য খন্ডন করেছেন তিনি৷ তাঁর কথায়, পালাটানাস্থিত বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থা রাজ্য সরকারকে শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হয়নি৷ তাই কেনা যায়নি৷
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে দাবি করেন, পূর্বতন সরকার পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পের মালিকানা চায়নি তা সর্বৈব মিথ্যা৷ তাঁর বক্তব্য, ওএনজিসি পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পেরর ৫০ শতাংশ শেয়ার নিজেদের হেফাজতে রেখে দিয়েছিল৷ বাকি ৪৯৫ শতাংশ আইএলএন্ডএফএস’র হাতে ছিল৷ রাজ্য সরকারকে ০৫ শতাংশ শেয়ার দেওয়া হয়েছিল৷ তখন, ওএনজিসি’র কাছে আরো শেয়ার চেয়েছিল রাজ্য৷ কিন্তু, ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার সরকারী হাতে গেলে বাজার থেকে টাকা তুলতে পারবে না ওএনজিসি, এই অজুহাতে রাজ্যকে ০৫ শতাংশের বেশি শেয়ার দেওয়া হয়নি৷ মানিক দে দাবি করেন, পূর্বতন সরকারের তখন একমাত্র লক্ষ্য ছিল যেভাবেই গড়ে উঠুক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি৷ তাই, ওএনজিসি’র সমস্ত সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছিল তদানিন্তন সরকার৷ কিন্তু, প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর মন্ত্রিসভার অনুমোদনক্রমে ১০ শতাংশ কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছিল৷ কিন্তু, বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা রাজ্য সরকারের দাবি খারিজ করে দিয়েছিল৷ ফলে, তখন পালাটানার শেয়ার কেনা সম্ভব হয়নি৷
এদিন তিনি পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ২৬ শতাংশ শেয়ার কেনার বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারের সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়েছেন৷ তবে, মালিকানায় ঝঁুকিও রয়েছে, বলেন তিনি৷ তাঁর কথায়, আইএলএন্ড এফএস’র শেয়ার রাজ্য সরকার কিনে নিলে আর্থিক দিক দিয়ে রাজ্যের আয় বাড়বে৷ বর্তমানে বিদ্যুৎ বিক্রি করে রাজ্যের আয় বেড়েছে৷ লাভজনক সংস্থার মালিকানা মিললে আয়ের পরিমান নিঃসন্দেহে বাড়বে৷
তবে, শেয়ার কিভাবে কিনবে রাজ্য সরকার তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে৷ কারণ, যে কোন শেয়ার বিক্রি করতে গেলে বাজারে তা ছাড়তে হয়৷ সেক্ষেত্রে নিলামে দর কত উঠবে তার উপর শেয়ারের দাম নির্ভর করবে৷ সেক্ষেত্রে কখনো কম মূল্যে শেয়ার কেনা যায়৷ আবার কখনো অনেক বেশি মূল্য দিতে হয় ওই শেয়ারের জন্য৷ সবই নির্ভর করবে দর কত উঠছে৷ মানিক দে’র কথায়, ৩/৪শ কোটি টাকায় শেয়ার কিনলেও রাজ্যের লোকসান হওয়ার কথা নয়৷ বরং আয় দিন দিন বাড়বে৷ কিন্তু, দেশীয় বাজারে বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেলে দাম অনেক কমে যাবে৷ তাতে, লোকসানের ভাগিদার রাজ্য সরকাকেও হতে হবে৷ তাঁর যুক্তি, দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থাগুলির বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থার কাছে প্রচুর টাকা দেনা রয়েছে৷ ফলে, এখন বিদ্যুৎ সরবরাহ সংস্থাগুলি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ক্রয় করছে না৷ ফলে, বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা তাদের কিছু কিছু ইউনিট বন্ধ করে রেখেছে৷ একইভাবে রাজ্যেও একই অবস্থার সৃষ্টি হলে মুশকিলে পড়তে হবে৷ তাঁর আরও আশঙ্কা, ভবিষ্যতে ওএনজিসি গ্যাসের দাম বাড়ালে রাজ্যকেও লোকসানের ভাগিদার হতে হবে৷