কলকাতা, ৮ নভেম্বর (হি. স.): প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পটেলের মূর্তির আবরণ উন্মোচন নিয়ে যারা সমালোচনায় মুখর হয়েছেন, তাঁদের একহাত নিলেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল তথাগত রায়। বৃহস্পতিবার তথাগতবাবু কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, “এই বিতর্কের মধ্যে দিয়ে বেশ কিছু সত্য বেড়িয়ে আসছে। আসবে।”
জওহরলাল নেহরুর নানা সিদ্ধান্তে কীভাবে ভারতের ক্ষতি হয়েছে, কীভাবে পটেল নেহরুর বিরোধিতা করার চেষ্টা করেছেন, তার নানা ঐতিহাসিক উল্লেখ করেন মেঘালয়ের রাজ্যপাল। তিনি কলকাতা প্রেস ক্লাবে পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘সর্দার বল্লভভাই পটেল— এ স্কলার এক্সট্রাঅর্ডিনারি’ বইয়ের উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন।
তথাগতবাবু বলেন, “দেশভাগের সময়ে পাইকারি হারে ওপার বাংলা থেকে এ পার বাংলায় হিন্দুদের পাইকারিভাবে মেরে তাড়িয়েছিল মুস্লিমরা। চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছিল হিন্দুরা। এ সব কথা এখন এখানে বলা যাবে না। বলতে হবে দেশভাগের ফলে শরনার্থীশ্রোত আছড়ে পড়েছিল এই বাংলায়। অর্থাৎ সত্য গোপন করতে হবে।“
১৯৫০ সাল বা তার আশপাশে পূর্ববঙ্গে যে হিন্দু গণহত্যা হয়েছিল, তা নিয়ে ঐতিহাসিকরা সেভাবে সরব নন। এই অভিযোগ করে এ দিন তথাগতবাবু বলেন, “পশ্চিম পাকিস্থান থেকে পঞ্জাবে আসা উদ্বাস্তুদের নিয়ে অনেক বই বা লেখালেখি হয়েছে। ছায়াচিত্র হয়েছে। এই বাংলায় তা হয় নি। পাঞ্জাবের শরনার্থীদের তুলনায় এই বাংলায় শরনার্থীদের সিকির সিকিভাগ কল্যাণ প্রকল্পও হয় নি। সর্দার পটেল যদি অকালে চলে না যেতেন, তা হলে এই অবস্থা হত না। তিনি যদি সক্রিয় থাকতেন যাদবপুর-ঢাকুরিয়া-দমদমের মত উদ্বাস্তু-অধ্যুষিত এলাকাগুলি পশ্চিম পাকিস্থানের উদ্বাস্তুদের উপনিবেশের মত ভাল হত।“
মেঘালয়ের রাজ্যপাল বলেন, নেহরুর ভুল নীতির জন্য এবং সক্রিয়, সফল পটেলকে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতভূক্তির জন্য কাজ করতে না দেওয়ার চরম মাশুল দিতে হয়েছে আমাদের। কীভাবে পটেল দক্ষতার সঙ্গে তৎকালীন প্রায় পাঁচশ রাজ্যকে ছলে-বলে-কৌশলে বাগে ভারতের নিয়ন্ত্রণে আনেন, তার ব্যাখ্যা করে তথাগতবাবু এ দিন বলেন, “এখনও জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের গায়ে বিষাক্ত ঘা হয়ে আছে। এর একটা বড় অংশ শত্রুরাষ্ট্র পাকিস্থানের অন্তর্গত। ওই রাজ্য নেহরু নিজের হাতে না রেখে পটেলের হাতে দিলে এই অবস্থা কিছুতেই হত না।
নেহরুর বিদেশনীতির কড়া সমালোচনাও করেন তথাগতবাবু। বলেন, চিন তিব্বত আক্রমণের পর যখন সেটিকে উপনিবেশ করে, ভারত তা সমর্থন করে। তা না করে ভারত যদি বিদেশের সাহায্য নিয়ে এ দেশের মাটি ব্যবহার করে চিনকে রুখত, এ রকম হত না। আজ আমরা বাঁ কাঁধে একটা বাড়তি বোঝা নিয়ে বেড়াচ্ছি।