নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৫ নভেম্বর৷৷ স্বাধীনতার পর থেকেই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে৷ এই অদৃশ্য হস্তক্ষেপ
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2018/11/Justice-Talapatra-300x199.jpg)
ভয়ঙ্কর৷ তা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক৷ সোমবার আগরতলায় রবীন্দ্র ভবনে মহারাজা বীর বিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ত্রিপুরা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র জাতীয়তাবাদের বিষয়টি নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন৷
এদিকে, জাতীয়তাবাদ নিয়ে গোটা দেশে জোর আলোচনা পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ চলছে৷ সমাজ বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা জাতীয়তাবাদের ব্যাখ্যা দিচ্ছেন নিজেদের মত করে৷ ত্রিপুরা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র সোমবার এই জাতীয়তবাদ নিয়ে বর্তমানে দেশের অবস্থা কি তা তুলে ধরেন৷ শ্রীতলাপাত্র তাঁর ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, জাতীয়তাবাদ নিয়ে বর্তমানে দেশে এক অস্থিরতা চলছে৷ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের লোকদের কাছে এই জাতীয়তাবাদ উল্লাসের বিষয়৷ অন্যদিকে সংখ্যালঘিষ্টদের জন্য গভীর উদ্বেগের ও উৎকন্ঠার, শঙ্কারও বটে৷
আলোচনা সভার বিষয়বস্তুর মধ্যে ছিল গণতন্ত্র এবং জাতীয়তাবাদ৷ প্রথমেই বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র বলেন, গণতন্ত্রের ব্যাখ্যা বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে দিয়েছেন৷ তিনি দেশের গণতন্ত্র নিয়ে তার অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের আইনের শাসন ব্যবস্থার উপর একটা হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা চলে আসছে৷ এই অদৃশ্য হস্তক্ষেপ দেশের গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক৷ ভারতের সংবিধানকে পর্যন্ত অমান্য করার চেষ্টা হচ্ছে৷ গণতান্ত্রিক কাঠামোতে সংসদ, বিচারালায় সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলি গণতন্ত্রের মূল ভিত৷ এগুলিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা হয় বলেও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি শুভাশিষ তলাপাত্র৷ তিনি জাতীয়তাবাদ নিয়ে দেশে চলমান অস্থিরতাকে উদ্বেগের সঙ্গে নিয়ে বলেন, ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশে৷ ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনাতে তা স্পষ্ট করেই উল্লেখ রয়েছে৷ কিন্তু, জাতীয়তবাদের প্রসঙ্গ টেনে সংখ্যাগরিষ্ঠরা তাদের মতামতকে সংখ্যালঘিষ্ঠদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ তাতে করে সংখ্যাগরিষ্ঠরা উল্লাসে মেতে উঠেন এবং সংখ্যালঘিষ্ঠরা আশংকায় থাকে৷ বিচারপতি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ব্রিটিশরা ভারত শাসন করার পর দুটি দেশের জন্ম হয়েছে৷ সেই সময় থেকে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে যে দুটি দেশ গঠিত হয়েছিল সেই দেশগুলির মধ্যে বৈরীতার মনোভাব তৈরী হয়৷ আজও স্বাধীনতার এতকাল পরও বৈরীতা রয়েই গিয়েছে যেটা অত্যন্ত উদ্বেগের৷ এদিকে, এদিনের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ৷ স্বাগত ভাষণ দেন এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য অধ্যাপক গৌতম কুমার বসু৷