নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ নভেম্বর৷৷ বালির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ সাথে বালিতে রয়েলটি বাড়ানোর সিদ্ধান্তে শিলমোহর দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ জানিয়েছেন, বালি বিক্রি নিয়ে একাংশ অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷ পাশাপাশি, রাজ্য সারকারেরও ক্ষতি হচ্ছে৷ তাই, বালির ব্যবসায় লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে৷
শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, এতদিন বালি বিক্রিতে রাজ্য সরকার প্রতি কাম ৩৫টাকা করে রয়েলটি সংগ্রহ করত৷ রাজ্য মন্ত্রিসভা বালিতে রয়েলটি বৃদ্ধিতে অনুমোদন দিয়েছে৷ এখন থেকে প্রতি কাম বালিতে ৭০ টাকা রয়েলটি দিতে হবে৷ তাঁর দাবি, বিভিন্ন রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যে বালিতে রয়েলটির পরিমাণ অনেকটাই কম৷ একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, বালিতে প্রতি কাম অসমে ১৪০ টাকা, মেঘালয়ে ৯০ টাকা, নাগাল্যান্ড ১৩০ টাকা, সিকিম ১০৫ টাকা, মিজোরাম ৯০ টাকা এবং পঃবঙ্গে ১৯৭ টাকা রয়েলটি সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ রাজ্যেও রয়েলটি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাঁর যুুক্তি বালি বিক্রিতে ব্যবসা প্রচুর হলেও রাজ্য সরকারের কোষাগারে যৎসামান্য অর্থই ঢুকছে৷ তিনি জানান, গত অর্থ বছরে বালিতে রয়েলটি বাবাদ ৩ কোটি ২ লক্ষ টাকা পেয়েছে রাজ্য সরকার৷ এখন তা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
এদিন তিনি স্পষ্ট করেন, বালি বিক্রিতে রয়েলটি বাড়ানো হলেও জনসাধারণের অসুবিধা হবে না৷ তাঁর কথায়, রাজ্যে বালি বিক্রিতে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই৷ ফলে, মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা জনসাধরণের কাছ থেকে যেমন খুঁশি টাকা আদায় করে চলেছে৷ তাঁর বক্তব্য, ছোট এক গাড়ি বালি ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা, মাঝারি এক গাড়ি বালি ৩৫০০ এবং বড় এক গাড়ি বালি ৫০০০ থেকে ৫৫০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে৷ তাঁর দাবি, সরকার যে দামে বালি কিনে থাকে একই দামে সাধারণ মানুষও কিনতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ তাঁর কথায়, বালি বিক্রিতে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এবং ন্যাশনাল গ্রিণ ট্রাইবুনালের নির্দেশিকা মেনেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ তিনি জানান, আট জেলায় জেলা শাসকদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ ওই কমিটির সুপারিশ মিললেই ডিএফও লাইসেন্স ইস্যু করবেন৷ বর্তমানে আট জেলায় ২৫০ টি ফরেস্ট ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া আছে৷ আশ্চর্য্যের বিষয় হলো ওই লাইসেন্স দিয়েই বিগত দিনগুলিতে বালির ব্যবসা করা হত৷ বালির জন্য আলাদা কোনও লাইসেন্স ছিল না৷ তাই এখন বালি বিক্রিতেও পৃথক লাইসেন্সের ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট স্থান বালি তোলার জন্য চিহ্ণিত করে দেওয়া হচ্ছে৷ এই বিষয়গুলি কড়া নজরদারিতে রাখা হবে৷
তাঁর সাফ কথা, বালিতে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সরকার একদামে এবং জন সাধারণ অন্য দামে বালি কিনছেন৷ তাঁর কথায়, পূর্ত দপ্তর স্থানীয় কুয়েরিগুলি থেকে প্রতি কাম ৩০০ টাকা দরে বালি কনছে৷ কিন্তু, সাধারণ মানুষ অনেক বেশি দাম দিয়ে বালি কিনতে হচ্ছে৷ তাঁর ধারনা, রাজ্য সরকারের গৃহীত এই পদক্ষেপে সাধারণ মানুষ ও সরকার উপকৃত হবে৷