নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ অক্টোবর৷৷ মাছে-ভাতে বাঙালির ঘুম উড়ে গেছে৷ কারণ, অন্ধ্রের মাছে রয়েছে ফরমালিন৷ তাই, বিহার সরকার
অন্ধ্রের মাছ বিহারে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে৷ স্বাভাবিকভাবেই, এরাজ্যও যেখানে অন্ধ্রের মাছের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল, সেখানে রাজ্যবাসীর কপালেও চিন্তার ভাজ পড়েছে৷ বিষ মাছ বন্ধে উদ্যোগী হবে কি রাজ্য সরকার, সেই প্রশ্ণ এখন মৎস্য পিয়াসীদের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে৷
পূর্বতন সরকারের আমলেও মাছে ফরমালিন ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল৷ তৎকালীন সময়ে এনিয়ে ব্যাপক দৌড়ঝাপ হয়েছে৷ কিন্তু, কিছুদিন যাওয়ার পর বিষয়টিকে কৌশলে ঠান্ডাঘরে ঠেলে দেওয়া হয়৷ তখন অন্ধ্র সরকার বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছিল, তাদের মাছ সুরক্ষিত৷ কিন্তু, এখন বিহার সরকার তাদের রাজ্যে অন্ধ্রের মাছ নিষিদ্ধ ঘোষণা দেওয়ায়, আবারও ফরমালিন নিয়ে ভাবা দরকার বলে মনে করছেন ত্রিপুরাবাসী৷
সম্প্রতি বিহার সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, অন্ধ্রের মাছে রয়েছে ক্যান্সারের জীবানু বহনকারী ফরমালিন৷ এই ফরমালিন ব্যবহার করেই দীর্ঘদিন তাজা রাখা হয় মাছ৷ বিহার সরকারের দাবি, ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে অন্ধ্রের মাছে ফরমালিনের উপস্থিতি৷ তাই সোমবার সরকারীভাবে ঘোষণা দিয়েছে বিহার সরকার, রাজ্যের বাজারে ঢুকতে পারবে না অন্ধ্রের মাছ৷
বিহার সরকারের এই সিদ্ধান্ত স্বাভাবিকভাবেই ত্রিপুরায় মৎস্য পিয়াসীদের মনেও দাগ কেটেছে৷ মঙ্গলবার আগরতলায় বাজার থেকে মাছ কিনে ফেরার সময় জনৈক ক্রেতা জানিয়েছেন, চালানি মাছ দেখে শংকিত বোধ করেছি৷ তাই, পঁুটি মাছ একটু দাম বেশি হলেও কিনে নিয়েছি৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, সচেতন ক্রেতাদের সহজেই ফরমালিন যুক্ত মাছ চিনতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়৷ বিশেষজ্ঞের কথায়, ফরমালিন দেওয়া মাছের আঁশ অপেক্ষাকৃত শক্ত হবে৷ ওই মাছের কানকো অতিরিক্ত লাল থাকবে৷ ফরমালিন দেওয়া মাছের চোখের ঔজ্জ্বল্য নষ্ট হয়ে যাবে এবং ওই মাছ টিপে দেখলে তা অনেকটা রবারের মতো লাগবে৷ শুধু তাই নয়, ওই মাছে আঁশটে গন্ধের বদলে একটা কেমিক্যাল জাতীয় গন্ধ বেরুবে৷
তবে, শুধু ফরমালিন নিয়ে ভাবলেই যথেষ্ট নয়৷ বিশেষজ্ঞদের কথায়, মাছে ফরমালিন ছাড়াও সীসা ও ক্যাডমিয়ামের মতো ক্ষতিকারক ধাতুর উপস্থিতিও পাওয়া যায়৷ যা মানুষের দেহের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক৷ ফলে, এই মুহুর্তে রাজ্যে আমদানি অন্ধ্রের মাছ ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা খুবই জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে৷
পূর্বতন সরকারের আমলে ত্রিপুরায় অন্ধ্র থেকে আমদানি কয়েকটি মাছে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় রাসায়নিকের ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছিল৷ কিন্তু, অন্ধ্রের মাছের উপর প্রতিনিয়ত নজরদারী জারি রাখেনি সরকার৷ বর্তমানে আবারও অন্ধ্রের মাছ নিয়ে জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে৷ ফলে, অবিলম্বে রাজ্য সরকার অন্ধ্রের মাছের নমুনা পরীক্ষা করে দেখুক, চাইছে রাজ্যবাসী৷
দূর্গোৎসবের আর মাত্র হাতে গুনা কয়েকদিন বাকি৷ এই সময়ে মাছ নিয়ে বাড়তি চিন্তা উৎসবের আমেজে ভাঁটা পড়তে পারে বলেই মনে হচ্ছে৷

