কলকাতা, ২৭ জুলাই (হি. স.): কৃষকদের ধান সংগ্রহ প্রকল্পে কেন্দ্রের ভূমিকার সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তিনি এ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে দাবি করেন, কৃষক-কল্যাণে আমরা যা যা করেছি, সারা ভারতের তা অনুসরণ করা উচিত।
এ দিন বিধানসভা অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এ রাজ্যে এক কৃষকও আত্মহত্যা করেননি।“এর আগে তিনি কেন্দ্রের সমালোচনা করতে গিয়ে জানান, “সারা দেশে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্র-গুজরাটে। কৃষকদের বিমা নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকা ভুল এবং ধোঁয়াটে।
ফসল নষ্ট হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কৃষককে বিমা যোজনায় যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়, তার ৬০ শতাংশ আমরা দিই। ৪০ শতাংল দেয় কেন্দ্র। কাল একটা বিজ্ঞাপন দেখলাম। তাতে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সহ কৃষকদের বিমার ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র। এ তো খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি!”
কৃষি বিমার ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করছে কেন্দ্র। এ কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কীভাবে এই কার্ড আবশ্যিক করা হচ্ছে? অথচ, অনেকে নানাভাবে আধার কার্ড সংগ্রহ করে নিচ্ছে। এই তো দু‘জন চিনা নাগরিক ধরা পড়ল এই কার্ড নিয়ে। কে এই কার্ড নিয়ে কোথা থেকে আসছে, তা বোঝা দায়! কৃষি বিপননের কাজকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সমবায় ব্যাঙ্ককে বলেছি কৃষকদের ঋণ দিতে। ক্রেডিট কার্ডে ২ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া উচিত। ৩০ লক্ষ কৃষককে আমরা পুরো ছাড় দিয়েছি। ওদের কম দামে বিদ্যুৎ, বড় গুদামের সুযোগ, হিমঘর, পেনশন, সংগঠিত বাজার, ‘কৃষিরত্ন’, খাজনা-মুকুব, মিউটেশনের সুযোগ প্রভৃতি দিয়েছি। সারা ভারতের এগুলি অনুসরণ করা উচিত।
কৃষকদের আয় ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুন করার চেষ্টা হচ্ছে। এ কথা জানিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী অধিবেশনে বলেন, ইতিমধ্যে ওদের এই আয় ৩ শতাংশের ওপর বাড়িয়েছি।
এর আগে এ দিন অধিবেশনে কংগ্রেসের অসিত মিত্রর প্রশ্নের উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “ধানের অভাবী বিক্রি বন্ধ করার জন্য চাষিদের কাছ থেকে সরকার ধান কেনা শুরু করেছে। মোট ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৫৮ জন চাষির কাছ থেকে ৩০ লক্ষ ২৮ হাজার ৯২০ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে।“
কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী বলেন, কিছুকাল আগে জেনেছিলাম, সরকারকে চাল দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চালকল মালিকরা তাঁদের নায্য পাওনা পাচ্ছেন না। খাদ্যমন্ত্রী এর জবাবে বলেন, “সরকার চালকলগুলির কাছ থেকে সরাসরি চাল কেনে না । ধান থেকে পাওয়া চাল গুদামে গেলে খাদ্য দফতরের গুণমান বিভাগ তা খতিয়ে সুপারিশ পাঠান জেলা নিয়ন্ত্রককে। এর পর নির্দিষ্ট প্রথা মেনে পাওনা মেটানোর ব্যবস্থা করে খাদ্য দফতর। এগুলিতে একটু সময় লাগে। কিছু জায়গায় বাকি ছিল। এ বছর বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।”