নয়াদিল্লি, ২২ জুলাই (হি.স.) : শোষিতদের হয়ে লড়াই করতে হবে কংগ্রেসকে | রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পর রবিবার দলের নবগঠিত ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকে দলের নেতা-কর্মীদের এই নির্দেশ দেন কংগ্রেস সভাপতি | বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী | বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পাশে থাকার অঙ্গীকার করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং |

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সোনিয়া গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মোদী সরকারের শেষের ঘন্টা বেজে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বঞ্চিত এবং গরিবদের জন্য ভয় এবং নৈরাশ্যের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। আরএসএস সাংগঠনিক বা আর্থিক দিক দিয়ে শক্তিশালী। কিন্তু এর মোকাবিলা করার জন্য বিরোধীদের কৌশলগত ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বৈঠকে তিনি আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কৌশলগত জোটের প্রস্তাবও দেন তিনি । সোনিয়া বলেন, ব্যক্তিগত স্বার্থ ভুলে আমাদের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কৌশলগত সমঝোতার পথে যেতে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহ সিং। বৈঠকে তিনি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন | কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর পাশে থাকার অঙ্গীকার করে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি রাহুল গান্ধীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, ভারতের সামাজিক সৌহার্দ্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে পুনঃস্থাপন করার বিশাল কাজে আমরা তাঁকে পূর্ণ সমর্থন করব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্রমাগত নিজের আত্মপ্রশংসা করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ‘জুমলা’ উন্নয়নের গতিকে রুদ্ধ করেছে। ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয়কে দ্বিগুণ করার যে পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে তার নিন্দা করে মনমোহন সিং বলেন, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য কৃষিতে বৃদ্ধির হার ১৪ শতাংশ হওয়া দরকার। যা এখনও হয়নি।
এদিনের বৈঠকে দলের নেতাদের দেশের দলিত, তফসিলি ও গারিবদের পাশে দাঁড়াতে বললেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। দলের নবগঠিত ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠকে নেতাদের শোষিতদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিজেপি দলিত, উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণী, সংখ্যালঘু এবং গরিবদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এই অবস্থায় কংগ্রেস নেতাদের দেশের দলিত, তফসিলি ও গারিবদের পাশে দাঁড়াতে হবে | নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি মনে করিয়ে দেন, কংগ্রেসকেই হতে হবে ‘ভারতের কণ্ঠস্বর’। রাহুল গান্ধী আরও বলেন, নবনিযুক্ত ওয়ার্কিং কমিটিটি অভিজ্ঞতা এবং উৎসাহের মিশেল দিয়ে গড়া। নতুন, পুরনো, ভবিষ্যতের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে এই কমিটি।
অন্য দলের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে বৈঠকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিং বলেন, অন্য দলের সঙ্গে জোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে হাইকম্যান্ড। এব্যাপারে তারা যে দিকে পথ দেখাবে আমরাও সেই দিকে যাব। কংগ্রেসের প্রতি মানুষ এখন অনেক বেশি আস্থাশীল।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বৈঠকে বলেন, বর্তমান কংগ্রেস ১২ রাজ্যে শক্তিশালী। এর থেকে আমরা নিজেদের শক্তি তিন গুণ বাড়াতে পারি। বাকি রাজ্যের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে জোট হওয়া জরুরি।
কংগ্রেস নেতা সচীন পাইলট, শক্তি সিং গোহিল, রমেশ চেন্নিথালারা বৈঠকে দাবি তোলেন কৌশলগত জোটের পক্ষে আমরা। কিন্তু এই জোটের কেন্দ্রবিন্দু অবশ্যই কংগ্রেস হবে এবং এই জোটের মুখ হবেন রাহুল গান্ধী ।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি নতুন করে সাজিয়েছেন রাহুল গান্ধী। কমিটিতে এ কে অ্যান্টনি, আহমেদ প্যাটেল, গুলাম নবি আজাদ ও মল্লিকার্জুন খাড়গেকে রাখার পাশাপাশি সরিয়ে দিয়েছেন দিগ্বিজয় সিং, কমল নাথ, সুশীল কুমার সিন্ধের মতো বয়স্কদের।