নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ জুলাই৷৷ শরিকি ঝামেলায় উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে জম্মুইজলা- টাকারজলা এলাকা৷ সোমবার বিজেপি কর্মীদের হাতে
রামধোলাই খাওয়ার পর মঙ্গলবার প্রতিশোধ নেয় আইপিএফটি কর্মীরা৷ এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা চালায় আইপিএফটি কর্মীরা৷ অভিযোগে জানা গেছে, সকাল থেকেই জম্মইজলা ও টাকারজলা বাজারে আইপিএফটি কর্মীরা বিজেপি সমর্থীত ব্যবসায়ীদের দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ঘরেও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে আইপিএফটির বিরুদ্ধে৷ পাশাপাশি উৎশৃঙ্খল আইপিএফটির কর্মীরা এদিন খুমুলুঙ – জম্পুইজলা – টাকারজলা পথ অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধে নামেন৷ বিকেলে পুলিশ সুপারেরর অনুরোধে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন৷ কিন্তু পরিস্থিতির থমথমে ভাব কাটেনি৷ ক্রমেই পরিস্থিতি মারাত্মক অবনতি হওয়ায় প্রশাসনের তরফে জম্পুইজলা ও টাকারজলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশ, টিএসআর ও আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে৷
সোমবার বিজেপি কর্মীদের হাতে আইপিএফটি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ৷ এরই প্রতিশোধ নিতে গিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই আইপিএফটির কর্মীদের হিংস আক্রমণে উত্তপ্ত হয়ে উঠে জম্পুইজলা ও টাকারজলা এলাকা৷ অভিযোগে জানা গেছে, আইপিএফটি কর্মীদের আক্রমণের কারণে বিজেপি সমর্থীত ব্যবসায়ীরা ভয়ে দোকান বন্ধ করে পালিয়েছেন৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, আইপিএফটি কর্মীরা বেশ কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে৷ এছাড়া বিজেপি সমর্থীতদের বাড়ি ঘরেও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে আইপিএফটির বিরুদ্ধে৷ এই ঘটনায় এদিন বিজেপি জম্পুইজলা মন্ডল সভাপতি নির্মল দেববর্মা ১৫ জন আইপিএফটি কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন৷
স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই আইপিএফটি কর্মীরা সন্ত্রাস চালিয়েছে জম্পুইজলা ও টাকারজলা এলাকায়৷ জম্পুইজলার মন্ডল সভাপতি নির্মল দেববর্মা জানান, এদিন বুদ্ধিবাজারে বাদল দেববর্মা ও ভিক্টর রাঙ্খল নামে দুই বিজেপি কর্মীকে আইপিএফটি কর্মীরা প্রচন্ড মারধোর করেছে৷ তাদের দুজনের বাড়ি ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাতও করেছে আইপিএফটি কর্মীরা৷ তাঁর অভিযোগ, বাদল দেববর্মার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা ছিনতাই করা হয়েছে৷
এদিকে সকাল ৯টা থেকে আইপিএফটি কর্মীরা খুমুলুঙ-জম্পুইজলা-টাকারজলা রাস্তা অবরোধ করে৷ অবরোধ চলাকালীন অবরোধকারীরা রাস্তায় টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন৷ প্রশাসনের তরফে অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হলেও আইপিএফটি কর্মীরা তা শুনেননি৷ শেষে বিকাল চারটা নাগাদ সিপাহীজলা জেলা পুলিশ সুপারের অনুরোধে আইপিএফটি কর্মীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন৷ কিন্তু হিংস্রতা থামেনি৷
এদিন বিকেলে বুদ্ধিবাজারে আইপিএফটি কর্মীরা আরোও পাচটি বাড়িতে হামলা চালায়৷ এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের তরফে শান্তি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়৷ ওই বৈঠকে বিজেপির নির্মল দেববর্মা এবং আইপিএফটির বজ্রলাল দেববর্মা ও রামনাথ দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন৷ পুলিশের উপস্থিতিতে এই শান্তি বৈঠকে উভয় দলকেই নিজেদের মধ্যে বোঝাপরা করে নেওয়া উচিত বলে দাবি করেন টাকারজলা থানার ওসি৷ শান্তি বৈঠকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল কোনও দলের কর্মীরাই হামলা হুজ্জুতিতে নামবেন না৷ কিন্তু, বিজেপি ও আইপিএফটির নেতারা ফিরে যেতেই ফের জম্পুইজলা আইপিএফটি কর্মীদের তান্ডব শুরু হয়ে যায়৷ ফলে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশাল পুলিশ বাহিনী এলাকায় মোতায়েন করা হয়৷