রাজ্যে আইনের শাসন নেই, দলীয় কাজেও বাধা, বিজেপি সরকারকে চরম মাশুল দিতে হবে ঃ সিপিএম

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ মে৷৷ রাজ্যে আইনের শাসন নেই৷ দলীয় কাজেও বাধা দেওয়া হচ্ছে৷ এসবের জন্য বিজেপি সরকারকে চরম মাশুল দিতে হবে বলে  বুধবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ হুশিয়ারি দিয়েছেন৷ তিনি রাজ্যে এক অচলাবস্থ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন৷ বিজেপি সিপিএমের দলীয় কাজকর্ম করতে দিচ্ছে না৷ যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কোনও ভাবে কাম্য নয়৷

গৌতম দাশ আরও অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার খোয়াইয়ে দলের সাংগঠনিক সভা করতে নেতৃত্বরা যাচ্ছিলেন৷ এর আগেই খোয়াই পার্টি অফিসটি ঘিরে রাখে বিজেপি কর্মীরা৷ এই অবরোধের ফলে সিপিএমের কোন নেতা কর্মী পার্টি অফিসে পৌঁছতে পারেননি৷ পরবর্তী সময়ের পুলিশের রাজ্যস্তরের আধিকারীকদের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং এই ঘেরাও সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়৷ পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘেরাও মুক্ত করা হয় পার্টি অফিস এবং সভা করা হয়৷ এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে বিজেপি কতটা অসহিষ্ণু৷ গৌতম দাশ বলেন, ১লা মে রাজ্যে আন্তর্জাতিক মে দিবস পালন করার ক্ষেত্রেও বাধা দিয়েছে বিজেপি৷ কার্ল মার্কসের জন্মদিবসও পালন করতে বাধা দেওয়া হয়৷ এসব কী হচ্ছে, প্রশ্ণ তুলেন তিনি৷ এসব কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না৷

তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজধানী আগরতলা শহর ও শহরতলীতে সিপিএম পার্টি অফিস, ট্রেড ইউনিয়নের অফিস সহ দোকনপাট ভেঙ্গে উচ্ছেদ করা হচ্ছে৷ বহু পুরনো পার্টি অফিস রয়েছে৷ সেগুলিও ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে৷ আলাপ আলোচনার কোন সুযোগ রাখছে না৷ তাছাড়া পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডঃ মিলিন্দ রামটেক কিভাবে  এই উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেও প্রশ্ণ তুলেন গৌতমবাবু৷ তিনি বলেন, ডঃ মিলিন্দ রামটেকে বদলীর আদেশপ্রাপ্ত৷ তিনি বেআইনীভাবে এই উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ এসব মেনে নেওয়া যায়না৷ উচ্ছেদ অভিযানের নামে সাধারণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকারদের ব্যবসা বাণিজ্য শেষ করে  দেওয়া হচ্ছে৷ তারা পরিবার পরিজনদের নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন৷ তাদের পুনর্বাসনের জন্য সিপিএম পার্টি দাবী জানাচ্ছে বলে গৌতম দাস উল্লেখ করেন৷ তাছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ভাতা নিয়ে সুর চড়িয়েছেন গৌতম দাস৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকার স্বামী পরিত্যাক্তা ভাতা বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে৷ তিনি রাজ্যে যেসব সামাজিক ভাতা রয়েছে সেগুলি চালু রাখার জন্য দাবী জানিয়েছেন৷ বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ভাতা ন্যুনতম দুই হাজার টাকা করারও দাবী করেন৷

অন্যদিকে, সাংবাদিক সম্মেলনে সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, রাজ্যে বিজেপি ও আইপিএফটির মধ্যে চরম বিবাদ চলছে৷ শরিক দলের মধ্যে যেভাবে বিরোধ প্রকাশ্যে আসছে তা রীতিমতো উদ্বেগের৷ যে কোনও সময় বড় ধরনের বিবাদ রাজ্যের শান্তি সম্প্রীতিকে বিনষ্ট করতে পারে৷ মঙ্গলবার ছৈলাংটায় বিজেপি ও আইপিএফটির মধ্যে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তাতে তিনি আগামীদিনের রাজ্যের শান্তি সম্প্রীতি নিয়ে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *