কেমন আছে রাজ্যবাসী ঃ গুঞ্জন

সায়ন্তক চৌধুরী
ছোট রাজ্য ত্রিপুরা৷ কিন্তু, গুরুত্বের দিক থেকে কম নয়৷ ১৮ এর বিধানসভা নির্বাচনে আবার নতুন করে তাই বোঝা গেল৷ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ত্রিপুরা রাজ্য দখল করার জন্য হামলে পড়েছিল৷ কেননা, সিপিএম যে তাদের জাতশত্রু৷ তাইতো রাজ্যটাকে বাম বলয় থেকে উদ্ধারের মহানব্রত নিয়াছিল৷ অস্বীকার করা যাবে না যে, দেশের মধ্যে এক নম্বরের ধনী দল হিসেবে চিহ্ণিত বিজেপি৷ ১৮ এর নির্বাচনে টাকা খরচে তারা কার্পণ্য করেনি৷ গৌরী সেনের মত দুহাতে দেদার টাকা খরচ করেছেন৷ সেই তুলনায় ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট সরকার ছিল আর্থিক ভাবে দুর্বল৷ নির্বাচনি প্রচারে অর্থ খরচে কোনও কার্পণ্য করেনি বিজেপি৷ অসহায়ের মত দেখেছে সিপিএম৷ এবার ১৮ এর নির্বাচনে ক্ষমতা থেকে দূরে ছিটকে পড়লো সিপিএম তথা বামফ্রন্ট৷ তারপর?
রাজ্যে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হল বিজেপি৷ রাজ্য জুড়ে গেরুয়ার ছড়াছড়ি৷ একমাস আট দিন হল বিজেপি সরকারের বয়স৷ এই অল্প বয়সে বিজেপি সরকারের গতিবিধি নিয়ে কোনও বিচার বিশ্লেষণে যাওয়া যে অবর্ণণীয় কাজ হবে তা বলাই বাহুল্য৷ কিন্তু গুজবে রাজ্যবাসী কে কি বলছে তাতো শোনা যেতে পারে৷ জনগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করতেই পারে৷ এমন হক্ তাদের রযেছে৷ তাইতো রাজ্যের বৈশাখী হাওয়ায় এখন কান পাতলে শোনা যায় নানা কথা৷ অনেকের মতে বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী ও নেতারা বর্তমানে ভাষণের পর্যায়ে রয়েছেন৷ সেই সাথে তারা ভাসছেন অভিনন্দনের জোয়ারে৷ ভাষণে বিজেপি সরকার অনেক কিছু বলছেন৷ লোকে হাততালি দিচ্ছেন৷ কিন্তু তারপর? শোনা যাচ্ছে অনেক গুঞ্জন৷ বিজেপি সরকার অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসছে বলে যাদের অভিমত তারা কিন্তু এমনও বলেছেন যে, বিজেপি সরকার শুধু রাজ্য জুড়ে ‘হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা’ ভাব দেখাচ্ছেন৷ নেতা মন্ত্রীরা ভাষণে হাততালি কুড়োচ্ছেন৷ এখনো কোনও সুষ্ঠু কাজের দিশা খঁুজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে বিভিন্ন পঞ্চায়েত, ভিলেজ কাউন্সিল, পুর পরিষদ ও পুর নিগমের কাজে গতি আনার কোনও তৎপরতা আজও নেই৷ বিভিন্ন সরকারী দপ্তর এখনোও ঝিমিয়ে আছে৷ তবে, বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বৈঠক করছে৷ বিভিন্ন নির্দেশ দিচ্ছেন৷ কিন্তু, সরকারী কর্মীদের মাঝে সেই নির্দেশ পালনে এখনো তেমন আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে না৷ এখনো যেন রাজ্যজুড়ে সেই বাম সংসৃকতির হেলদোল দেখা যাচ্ছে৷ তাই তো সেই একাংশ রাজ্যবাসীর অভিমত হল যে, বিজেপি সরকার এখনো শুধু প্রচারে মত্ত৷
আবার অন্য অংশের মানুষ বিজেপি সরকারের উপর আস্থা রাখছেন৷ তাদের অভিমত হলো যে, বিজেপি সবেমাত্র ক্ষমতায় বসেছে৷ সরকারের তরুণ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব রাজ্যের উন্নয়নের রূপরেখা রাজ্যবাসীর সামনে তুলে ধরছেন৷ এনিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সাথেও যোগাযোগ রাখছেন৷ তাদের মতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জনতার সাথে মিশতে জানেন৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের মত তিনি মুখ গোমড়া করে থাকেন না৷ তাঁর এমন হাসিখুশি স্বভাবটা রাজ্যের একাংশ মানুষের কাছে আকর্ষণীয় বলে অনেকে মনে করেন৷ এভাবে রাজ্য জুড়ে অনেক গুঞ্জনের ডাল পালা বিস্তার হচ্ছে৷ অনেকের কাছে নতুন মুখ্যমন্ত্রী যেন কল্পতরু৷ আবার অনেকে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন৷ এভাবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে নিয়ে রাজ্যবাসীর মিশ্র প্রতিক্রিয়া শোনা যাচ্ছে৷ তবে এটা সত্য যে, নতুন বিজেপি সরকার খুব দ্রুততার সাথে রাজ্যবাসীর স্বার্থে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজেই বলেছেন যে, তাঁর সরকারের একশ দিন অতিবাহিত হবার পর বিজেপি সরকার সমালোচনায় পর্য্যায়ে পড়বে৷ এবং তখন থেকে বিজেপি সরকারের সমালোচনা করলে তিনি তা হৃষ্ট চিত্তে মেনে নেবেন৷ সুতরাং অপেক্ষা একশ দিনের৷ বিজেপি সরকারের একশন দিনের কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হবে৷ এখন কেবল অপেক্ষায় দিনের৷ তারপর বিজেপি সরকারের একশ দিনের কাজের খাতিয়ানে তুলে ধরা হবে৷ এখন কেবল অপেক্ষার পালা৷ ততদিন গুঞ্জনে কান পাতা ছাড়া আর উপায় কী?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *