ব্যাটারি চালিত রিক্সা

৷৷ সুবোধ ঘোষ৷৷

রাজ্য জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ব্যাটারি চালিত রিক্সা৷ প্রথমে এ ধরনের রিক্সা রাজধানীতে দুয়েকটা ছিল৷ বর্তমানে বানের মত হু হু করে যেন বাড়ছে ব্যাটারি চালিত রিক্সার সংখ্যা৷ রাজধানীতে বর্তমানে ছিটে ফোঁটা প্যাডেল চালিত রিক্সা দেখা যাচ্ছে৷ সিংহভাগ রিক্সা চলছে ব্যাটারিতে৷ এতে চালকদের কায়িক শ্রম অনেকটা কমেছে বটে৷ তবে বেড়ে গেছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি৷ ফলে, বিপজ্জনকের পেছনে রয়েছে একটা কারণ৷ তাহল সামনের চাকায় রয়েছে ব্রেক সিস্টেম৷ পেছনের দুটি চাকা একেবারে ফাঁকা৷ দ্রুতবেগে ছোটা এই ধরনের কোনও রিক্সার চালককে প্রয়োজনে ব্রেক কষতে হলে তাকে সামনের চাকার উপর নির্ভর করতে হবে৷ এক্ষেত্রে রিক্সা উল্টে যাবার সম্ভাবনা থাকে৷ আর তখন যদি সেই রিক্সায় কোনও যাত্রী থাকে তবে সেই যাত্রীর জীবনও সংকটাপন্ন হয়ে উঠবে৷ তাই ব্যাটারি চালিত রিক্সা রাস্তায় চলাচলের আদৌ উপযোগী কিনা সেই ব্যাপারে প্রশ্ণ উঠা অস্বাভাবিক নয়৷

রাজ্যের তৎকালীন বামফ্রণ্ট সরকারের পরিবহন মন্ত্রী মানিক দে এক সময়ে বলেছিলেন যে, ভেহিক্যাল অ্যাক্টে ব্যাটারি চালিত রিক্সার কোন অনুমোদন নেই৷ অচিরেই এই জাতীয় রিক্সার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ উল্লেখ্য, সেই সময়ে প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে সিট্যুরও সভাপতি ছিলনে৷ তিনি মুখে বললেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে৷ কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ট দেখিয়ে অটো চালিত রিক্সা রাজপথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে৷ এবং এ দাপট উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে লাগলো৷ শুরুতে ছিল রাজধানীতে৷ এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে মফস্বলেও৷ এর পেছনে ছিল তৎকালীন বাম সরকারের নীরব মদত৷ এ মদতের পেছনে ছিল রাজনীতির রঙ৷ ছিল ভোট ব্যাঙ্ক স্ফীত করার অভিসন্ধি৷ ফলশ্রুতিতে ব্যাটারি চালিত রিক্সা রাজ্যজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে৷ চালকের পরিশ্রম যেমন কম লাগছে তেমনই গন্তব্যে যেতেও সময় লাগছে কম৷ কিন্তু যাত্রীদের বেড়েছে বিপদ৷ রিক্সার সামনের চাকার ব্রেক কষার সাথে সাথে রিক্সার উল্টে যাবার শংকাও থাকে৷ ফলে যাত্রীর মৃত্যুর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না৷ এসব রিক্সার কোন বৈধ লাইসেন্স না থাকাতে কোনও যাত্রী দুর্ঘটনার মরে গেলেও তার পরিবার জীবন বিমার টাকার জন্য কোনও ক্লেইম করতে পারবেন না৷ তাই ঝুঁকি পূর্ণ এই সব রিক্সা এড়িয়ে চলা হল বুদ্ধিমানের কাজ৷ এবং সেই সাথে বর্তমান বিজেপি সরকারের কাঁধেও কিছু দায়ি চেপেছে বটে৷ এ জাতীয় রিক্সার দুর্ঘটনা রোধে পরিবহন দপ্তর থেকে রিক্সার পেছনের দুটি চাকায় ব্রেক লাগানোর জন্য নির্দেশ  দেয়া যেতে পারে৷ তাহলে ব্যাটারি চালিত রিক্সা অত্যাধুনিক রিক্সায় পরিণত হবে৷ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কমবে৷ ভেহিক্যাল অ্যাক্টের আওতায় এনে এসব রিক্সাকে লাইসেন্সও দেয়া যেতে পারে৷ ব্যাটারি চালিত টমটম যদি লাইসেন্স পেতে পারেন তাহলে ব্যাটারি চালিত রিক্সা কেন লাইসেন্স পাবে না?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *