নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৯ জানুয়ারী৷৷ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের তিন দিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক৷ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফর আহমেদ ভবনে এই বৈঠকে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতায় যান দলের পলিব্যুরো এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা৷ কেউ কেউ শুক্রবার সকালেও আসেন৷ কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, আগামী ১৮ থেকে ২২শে এপ্রিল হায়দ্রাবাদে পার্টির ২২ তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে৷ এই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে পার্টি কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রস্তাবের খসরা চূড়ান্ত করা হবে৷ জানা গেছে, আগামী নির্বাচনগুলিতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার প্রশ্ণে এখন দল দ্বিধা বিভক্ত৷ এই তিনদিন ধরে কেন্দ্রীয় কমিটরি বৈঠকে সেসব নিয়েও আলোচনা হবে৷ শুক্রবার ইতিমধ্যে এই আলোচনা শুরুও হয়ে গেছে৷ বৈঠকে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের ওপরও আলোকপাত করা হবে৷ সিপিএমের মতে, বিজেপি সরকারের তিন বছর, সবচেয়ে বেশি প্রচার আর সবচেয়ে কম কাজের দৃষ্টিান্ত৷ এই সময়ের মধ্যে মানুষের জীবনযাপনের মান ক্রমশ নিচে নেমেছে৷ পেট্রোপণ্যের দাম প্রচন্ড বেড়েছে৷ অথচ, আন্তর্জাতিক বাজাপে কাঁচা তেলের দাম কমেছে৷ এর ফলেই মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে৷ খাদ্য সামগ্রী ও অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম বিশেষভাবে বাড়ছে৷
সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হবার কথা, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই জাতীয় আয় আমানতের হিসেবের মৌলিক ভিতটাই বদলে দিয়েছে৷ বিনিয়োগের হার দাবি অনুযায়ী বাড়েনি৷ সেই সঙ্গে বেকারির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে৷ ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র ব্যাপক প্রচার সত্ত্বেও বিদেশি পঁুজি বিনিয়োগ কমেছে৷ এদিকে কৃষিতে দুরাবস্থা বেড়েই চলেছে৷ বিজেপি সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি৷ কৃষকদের যে সহায়কমূল্য দেওয়ার কথা ছিল তা দেয়নি৷ কৃষকরা তাঁদের প্রয়োজন মেটাতে পারছেন না৷ কৃষকদের আত্মহত্যা বেড়েছে ২৬ শতাংশ৷ সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির মতে, চলতি বছরে আরএসএসের অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী সর্বস্তরে সাম্প্রদায়িক আক্রমণ চালানো ও তাকে মদত দেওয়ার ঘটনা ঘটছে সর্বস্তরে৷ ‘ঘর ওয়াপসি’, ‘লাভ জিহাদ’ ইত্যাদি প্রচারের পাশাপাশি ইতিহাসের সঙ্গে পুরাণের মিশেল দেওয়ার কাজও সমানে চলেছে৷ কট্টর আরএসএসের লোকদের নানা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল জায়গায় বসানো হচ্ছে৷ কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা এমপি, বা এমএলএ-দের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, যাঁরা সারা দেশে বিষ ছড়িয়ে যাচ্ছেন তাঁদের বত্তৃতায়৷ দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা মাথাচাড়া দিচ্ছে৷
এদিকে, বৈঠকে যোগ দিতে আগরতলা থেকে উড়ে গেছেন পলিটব্যুরোর সদস্য তথা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ ত্রিপুরার কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও কলকাতায় উড়ে গেছেন৷ ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কলকাতায় এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ সিপিএম সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে ত্রিপুরার প্রসঙ্গ অবশ্যই আলোচিত হবে৷ তাছাড়া নীতিগত অবস্থান নিয়েও আলোচনা হবে৷