কলকাতা, ৭ নভেম্বর (হি. স.) :এবার নারদ-কাণ্ডেও মুকুল রায় চলে আসতে পারেন সেফ জোনে। অন্তত সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। সারদার জাল কেটে তিনি কার্যত বেরিয়ে গিয়েছেন। তাঁকে গ্রেফতার তো দূরে থাক, এই মামলায় সিবিআইয়ের পেশ করা একটিও চার্জশিটে তাঁর নাম নেই। আর সেকথা বুক ঠুকে ইদানীং বলতেও শোনা যাচ্ছে তাঁকে।
একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড। এখন বিজেপির অন্যতম ভরসা। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার পর সোমবার পা রেখেছেন কলকাতায়। আর তার পর স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে জানিয়েছেন, সারদা কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তথ্যই সিবিআই পায়নি। প্রমাণ পেলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চয় তাঁকে ছেড়ে দিত না, চার্জশিটে নাম অন্তত থাকত। তাঁর দাবি, তাঁকে জেরা করার পর সিবিআই সারদা মামলায় আরও আটটি চার্জশিট পেশ করেছে। কিন্তু কোথাও তাঁর নাম নেই।
আর নারদ? সেখানে কী হবে? সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই নেতার দাবি,আইন আইনের পথেই চলবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। কারণ, নারদের ফুটেজে একমাত্র তাঁকেই টাকা নিতে দেখা যায়নি। আর এটাই তাঁর অনুকূলে যাচ্ছে এই তদন্তে।
সিবিআই সূত্রে খবর, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির শুরুতেই নারদ মামলায় প্রথম চার্জশিট জমা দিতে পারে। সেই চার্জশিটে মুকুল রায়ের নাম না থাকার সম্ভাবনাই বেশি। আর এর জন্য সিবিআইয়ের হাতিয়ার হবে দু’টি যুক্তি। তার একটা অবশ্যই তাঁকে টাকা না নিতে দেখা যাওয়ার বিষয়টি। আর দ্বিতীয়ত, এই মামলায় ১৩ জন অভিযুক্তের মধ্যে একমাত্র তাঁকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ বাকি রয়েছে। সেই কাজ এখনও করে উঠতে পারিনি সিবিআই। সেই যুক্তি দেখিয়েই প্রথম চার্জশিটে তাঁর নাম বাদ চলে যেতে পারে।
যদিও এই ঘটনায় এ মাসের শেষেই চার্জশিট পেশ করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না বলে সিবিআই সূত্রের খবর। কারণ, নারদ ফুটেজ এবং পুনর্নির্মাণের ফুটেজ ফরেনসিক ল্যাবে মিলিয়ে দেখা হবে। তার ভিত্তিতেই তৈরি হবে চার্জশিট। আর সেই কাজ শেষ করতে আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চায় সিবিআই। তাই তার পর ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হতে পারে। এই মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ মারা গিয়েছেন। সেই বিষয়টিও ওই চার্জশিটে দেওয়া থাকবে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ওই সূত্রে মারফত জানা গিয়েছে। তবে সুলতান আহমেদ তাঁর জীব্বদশায় সিবিআইকে কী কী জানিয়েছে, তা চার্জশিটে থাকতে পারে বলেই তদন্তকারীদের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে।
পরের চার্জশিটে মুকুলের নাম থাকবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কারণ, মুকুলকে নিয়ে এই মামলার পুনর্নির্মাণ করতে তৎপর সিবিআই। মুকুলও তদন্তে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি জানিয়েছেন, কলকাতায় থাকাকালীন তিনি সিবিআই এর সঙ্গে দেখা করবেন। এ কথা এসএমএস করে সিবিআইকে তিনি জানিয়েও দিয়েছেন। তার পর কী হবে, জানেন না তদন্তকারীরাও।

