BRAKING NEWS

আইটিআই ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোকে দক্ষতা বৃদ্ধির ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ ডিসেম্বর৷৷ দক্ষতা  বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য হল বেকারদের মধ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের

মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷
মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷

উদ্দেশ্যে কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা৷ অর্থাৎ, এই প্রশিক্ষণ এমন হবে যাতে মানুষ নিজের আয় উপার্জনের ব্যবস্থা নিজেরাই করতে পারে৷ এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখেই স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে  হবে৷ আজ সকালে মহাকরণের ১নং কনফারেন্স হলে আয়োজিত স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশনের সভায় এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ তিনি বলেন, স্কিল ডেভেলপমেন্ট এর কাজ ত্রিপুরায় আমরা অনেক আগেই শুরু করেছি৷ এর জন্য প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্র যাচাই করতে ফিল্ড সার্ভেও হয়েছে৷ আজ ভারত সরকার এই স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে অনেক কথা বলছে৷ কিন্তু যখন এই কাজ ত্রিপুরায় শুরু হয় তখন ভারত সরকারের এবিষয়ে কোনও পরিকল্পনাই ছিল না৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষি ও কৃষিনির্ভর বিভিন্ন ক্ষেত্র যেমন উদ্যানচাষ, মৎস্য চাষ, পশুপালন এবং বন এই ক্ষেত্রগুলিতে রাজ্যের বেশিরভাগ অংশের মানুষ  জীবিকা নির্বাহের জন্য নির্ভরশীল৷ এই ক্ষেত্রগুলির  উপর দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া হলেে একদিকে যেমন উৎপাদন বাড়বে তেমনি এগুলোর উপর নির্ভরশীল মানুষের অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতাও বৃদ্ধি পাবে৷ এছাড়াও পূর্ত, জলসম্পদ, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, ইনফরমেশন টেকনোলোজি প্রভৃতি দফতরের মাধ্যমেও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেবার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং রাজ্যের বাইরে উত্তর পূর্বাঞ্চল ও পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে কোন কোন বিষয়ের উপর চাহিদা রয়েছে তা আগে ভালোভাবে যাচাই করে নিতে হবে৷ তার ভিত্তিতেই দক্ষতা বিষয়ের উপর পরিকল্পনা নিরুপন করতে হবে৷ এমনভাবে পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে প্রশিক্ষণের পর রাজ্যের ছেলে-মেয়েরা রাজ্যের ভেতরে ও বহিঃরাজ্যে গিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে৷ পূর্ত দফতর রাজ্যের অভ্যন্তরে প্রচুর পরিমানে সড়ক, সেতু ও পাকা বাড়ি তৈরির কাজে যুক্ত৷ এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী  বলেন, এই সব নির্মাণ  কাজের জন্য প্রচুর দক্ষ লোকের দরকার৷ প্রায়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে পারলে রাজ্যের ভেতরইে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা সম্ভব হবে৷ এতে রাজ্যের মানুষই উপকৃত  হবে৷ একইভাবে পানীয় জল ও জলসেচ প্রকল্পের পাম্প মেশিনগুলো চালানো ও মেরামতির জন্যও প্রচুর লোকের দরকার হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী  বলেন, স্থানীয় জনগনকে ও বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে পারলে মেশিন চালানো ও মেরামতির কাজে যেমন সুবিধা হয়, তেমনি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরও অর্থ অপার্জনের একটি বিকল্প উপয়া তৈরি হয়৷ অনুরূপভাােব, বিদ্যুৎ দফতরের মিটার রিডিং এর ক্ষেত্রেও আউটসোর্সিং এর জন্য বেকার যুবক-যুবতীদের প্রায়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন৷ পাশাপাশি, মোবাইল ফোন, ওয়ার্র্টর পাম্প প্রভৃতির মেরামতি এবং অটোমোবাইল, ড্রাইভিং বিষয়েও প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা নিতে মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন৷ এতে অনেক মানুষের আয়-উপার্জনের সুযোগ ঘটবে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ মুখ্যমন্ত্রী টেইলার্রিং ও পোশাক-পরিচ্ছদ তৈরির বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছেন৷ এই ক্ষেত্রে মহিলাদের বেশি বেশি করে যুক্ত করতে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন৷ এতে মহিলারাও আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারবেন বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ শিল্প ও বাণিজ্য এবং হস্ততাঁত ও হস্তশিল্প দফতরকে এজন্য যৌথভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, রাজ্যে এখন প্রায় ৫০ হাজার স্বসহায়ক দল রয়েছে যার প্রায় ৫০ শতাংশ সদস্যই মহিলা৷ এই মহিলা সদস্যদের স্বসহায়ক দল পরিচালনায় ক্ষেত্রে দক্ষতা  বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বিশেষভাবে উদ্যোগ নিতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশনকে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আগামী ১৫-২০ বছর পর্যন্ত রাজ্যের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণের উদ্দেশ্যে ২০১৭-১৮ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের জন্য একটা একশন প্ল্যান তৈরি করতে মিশনকে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এক্ষেত্রে কৃষি ও কৃষিনির্ভর ক্ষেত্র, পাবলিক সার্ভিস ও বিজনেস সেক্টরের উপর প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা নিরূপন করতে বলেছেন তিনি৷ রাজ্যের আই টি আই এবং পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোকে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন৷ দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সারা দেশের সামনে ত্রিপুরাকে একটা  দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী রাজ্য হিসাবে তুলে ধরতে আন্তরিকতার সঙ্গে পরিকল্পনা নিরূপন ও রূপায়ন করতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশন  সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরগুলোকে মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন৷ স্কিল ডেভেলপমেন্ট মিশনের এই সভায় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ছাড়াও মুখ্যসচিব যশপাল সিং, মিশনের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান ড এস এক পান্ডা, বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সচিব ও সচিবগণ এবং পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *