নয়াদিল্লি, ২০ অক্টোবর (হি.স.)৷৷ দেশে শিক্ষার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে৷ ফলে, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাশ ফেল প্রথা চালু করার বিষয়ে ভীষণভাবে আগ্রহী কেন্দ্রীয় সরকার৷ এদিকে, দশমমান পর্যন্ত কাউকে আটকানো হবে না, তাই ভোট পরীক্ষা তুলে দিয়ে এখন ভীষণ চিন্তায় পড়েছে সিবিএসই৷ পড়ুয়াদের উপর চাপ কমাতে গিয়ে আখেরে তাদের ক্ষতি হচ্ছে, এনিয়ে অভিভাবক ও নানা মহল উদ্বেগ প্রকাশ করায় ছ’বছর বাদে পরীক্ষা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কথা ভাবছে ঐ কেন্দ্রীয় বোর্ড৷
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল ফের চালু করতে আগ্রহী কেন্দ্রীয় সরকার, এরজন্য শিক্ষার অধিকার আইনকে সংশোধন করতে চাইছে৷ প্রসঙ্গত, ইউপিএ সরকারের আমলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু কেন্দ্রে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা না থাকায় শিক্ষার মান পড়েছে বলে মনে করে নরেন্দ্র মোদি সরকার৷ তাই তারা ফের সুকলে পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনতে চায়৷
কয়েকবছর আগে শিক্ষার অধিকার আইনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেয় কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার৷ তখন মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী ছিলেন কপিল সিববল৷ এর ফলে কোনও ছাত্র সুকলে পরীক্ষায় ফেল করলেও তাকে ওই ক্লাসে রাখা যায় না৷ পরের ক্লাসে তুলে দিতে হয় বাধ্য হয়ে৷ এর ফলে শিক্ষার মান কমছে বলে বিভিন্নমহলে অভিযোগ ওঠে৷ এব্যাপারে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বেশিরভাগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন৷
শুক্রবার কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী জানান, চলতি নীতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তবে, এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনতে৷ পড়ুয়াদের শিক্ষার মানের অবনতি হয়েছে বলে অভিমত জানিয়ে পাঁচ রাজ্যের মন্ত্রী ও অভিভাবকদের নিয়ে গড়া একটি কমিটি পাশ-ফেল প্রথা পুনরায় চালু করার দাবি তুলেছে বলে জানান তিনি৷ একই সঙ্গে বলেন, সিবিএসই’তে পরীক্ষা না হলেও প্রতিটি ক্লাসের পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করতে হবে সুকলকে সেটা চাইছে সরকার৷ পরীক্ষা ব্যবস্থা ফেরানো হবে কিনা সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ২৫ অক্টোবর সেন্ট্রাল এডভাইজারি বোর্ড অব এডুকেশান এর বৈঠকে নেওয়া হবে৷ বৈঠকের পৌরোহিত্য করবেন জাভড়েকর৷
এদিন তিনি আরো জানান, অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা চালু করার বৈঠকে সেখানে আলোচনা হবে৷ তবে, রাজ্যগুলি এব্যাপারে যে যার মত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে জানান তিনি৷
সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষার অধিকার আইন সংশোধনের পক্ষে সায় দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীরা৷ আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন৷ এই অধিবেশনেই এটি সংশোধনের জন্য পেশ করতে পারে কেন্দ্র৷
কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের জনৈক পদস্থ কর্তা বলেন, দেশের শিক্ষাবিদদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সংগঠনগুলিও বলেছে, একদিকে কাউকে আটকে না রাখার নীতি, অন্যদিকে পরীক্ষা ব্যবস্থা উঠে যাওয়া, সব মিলিয়ে শিক্ষার মান ক্রমশ নিম্নগামী হচ্ছে৷ তাছাড়া, সিবিএসই’র ক্ষেত্রে সরাসরি দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষায় বসা এবং অন্যান্য বোর্ডে সরাসরি নবম শ্রেণীতে গিয়ে চাপ নিতে পারছে না ছাত্রছাত্রীরা৷ যেহেতু ছাত্রছাত্রীদের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং নির্ধারক ফ্যাক্টর পাশ-ফেল প্রথা তাই এবিষয়ে কাল বিলম্ব দেরি না করে পুনরায় চালু করার পক্ষেই মত সারা দেশের অভিভাবক মহলের৷
2016-10-22

