নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ জুলাই৷৷ পেট্রোল, ডিজেলের কৃত্রিম সংকট এবং দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোমবার খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরের অধিকর্তার কাছে ডেপুটেশান ও স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে৷ ডেপুটেশান প্রদানকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সুশান্ত চৌধুরী অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং অসম সরকারকে দায়ী করে নিজেদের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে৷ রাজ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের সংকট নিরসনের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না৷ জাতীয় সড়ক মেরামত হতে আরো বেশ কিছুদিন সময়লাগবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ সেক্ষেত্রে রাজ্য ও রাজ্যবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করতে বিকল্প পথ অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে মনে করে তৃণমূল কংগ্রেস৷ প্রয়োজনে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে পেট্রোল ও ডিজেল রাজ্যে নিয়ে আসার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের একাংশের মজুতদার জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থাকে পঁুজি করে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী মজুত থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে অহেতুক মূল্যবৃদ্ধি করে চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন সুশান্তবাবু৷ রাজ্যসরকার ও শাসকদলের নরম মনোভাবের কারণেই তারা এই সুযোগ পাচ্ছে৷ দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না রাজ্য সরকার৷ পশ্চিম বঙ্গ সরকার যেভাবে আলু, পেঁয়াজ ভোজ্য তেল সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে ত্রিপুরাতেও ঠিক সেভাবে বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ অন্যথায় রাজ্যের গরিব অংশের মানুষ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন৷ এসব বিষয়ে খাদ্য ও জনসংভরণ দপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের জরুরি উদ্যোগ গ্রহণ করতে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি৷
এদিকে, পেট্রোল ডিজেলের সংকট এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নামল যুব কংগ্রেস এবং এনএসইউআই৷ সোমবার বেলা এগারটা নাগাদ ছাত্র যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে পুরনো মোটরস্ট্যান্ড এবং মঠচৌমুহনীর মাঝামাঝি স্থানে আসাম- আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে৷ অবরোধের ফলে বেশকিছুক্ষণ জাতীয় সড়কে যানচলাচল বিঘ্নিত হয়৷ অবরোধস্থলের দুপাশে বেশ কিছু সংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে৷ খার্চি মেলার শেষদিনে পথবরোধ আন্দোলন সংগঠিত করায় দশর্নার্থীদেরকেও সাময়িক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে৷ অবশ্য আন্দোলনকারীদের সংখ্যা তেমন বেশি না হওয়ায় পথ অবরোধ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি৷ পূর্ব থানার পুলিশ কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাত্র যুব সংগঠনের অবরোধ আন্দোলন তুলে নিতে বাধ্য করে৷ অবশ্য এনিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন কোন অবনতি ঘটেনি৷ পথ অবরোধ আান্দোলনে অংশ গ্রহণ করে প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের সংকট চরম আকার ধারণ করেছে৷ রান্নার গ্যাস মিলছে না৷ একাংশের কালোবাজারিরা বাঁকা পথে জ্বালানি সংগ্রহ করে চড়া দামে খোলা বাজারে বিক্রি করছে৷ প্রশাসন কুম্ভকর্ণের ভূমিকায় নিমজ্জিত৷ নামকাওয়াস্তে দুয়েকদিন ধরপাকড়ের ভয় দেখালেও এখন সে ভয় আর নেই বললেই চলে৷ পাম্পগুলোতে জ্বালানি না মিললেও খোলাবাজারে লুকোচুরি করে কালোবাজারিরা এসব দাহ্য পদার্থ করে বিক্রি করে চলেছে৷ শুধু তাই নয়, জাতীয় সড়কের বেহাল অবস্থার সুযোগ নিয়ে রাজ্যের একাংশ ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে৷ এসবের উপর রাজ্য সরকার ও প্রশাসনের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই৷ এর দায় রাজ্য সরকারেরই৷ রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেই যুব কংগ্রেস এবং এনএসইউআই আজ পথ অবরোধ করে৷ এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে উভয় সংগঠন রাজ্যজুড়ে আরো বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে৷
2016-07-19

