জেএমবি সদস্য জেহাদি শহিদুলের মাধ্যমে আইসিস-এর জাল অসমে

গুয়াহাটি, ১০ জুলাই, (হি.স.) : আরেক শাহানুর আলমের মাধ্যমে রক্তাক্ত করার ব্লুপ্রিন্ট রচনা করেছে আইসিস। ‘খলিফা রাষ্ট্র’ গঠনের স্বপ্নে বিভোর বিশ্বত্রাস সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটির জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-কে সঙ্গে নিয়ে ভারত উপমহাদেশে অস্থিরতা স্থাপন করাই তাদের লক্ষ্য। এ জন্য আইসিস ব্যবহার করছে পশ্চিমবঙ্গ-অসমে জেএমবি-র বিস্তৃত নেটওয়ার্ককে। এ-ব্যাপারে তাদের সহযোগের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে অসমের এক যুবক।বরপেটা জেলার তারাবাড়ি থানার রৌমারিপথার গ্রামের শহিদুল ইসলাম নামের ওই ২১ বছর বয়সি জেহাদি যুবকের হাত ধরেই অসমে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে আইসিস। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে সংঘটিত বিস্ফোরণের পর এনআইএ (নিয়া)-র জালে আটক জেএমবি সদস্য শাহানুর আলম ওরফে ডাক্তারবাবুর অতি ঘনিষ্ঠ ছিল এই শহিদুল ইসলাম। শাহানুর আলমের নাশকতার পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ায় এবার জেএমবি-র সহযোগিতায় শহিদুল ইসলামকে এ কাজে ব্যবহার করতে চাইছে আইসিস।এদিকে, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (নিয়া) তাদের ওয়েবসাইটে ফটো-সহ এই দুর্ধর্ষ জেহাদির যাবতীয় বিবরণ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, শহিদুল ইসলামের জন্ম ১৯৯৫ সালে। বরপেটার বহরির নিকটবর্তী রৌমারিপথার গ্রামে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৮২ নম্বর ধারায় এক মামলা রুজু আছে। ছিপছিপে গড়নের শহিদুলের গায়ের রং ফর্সা। লম্বাটে ধরনের মুখাবয়ব। তার সঙ্গে এর আগে গ্রেফতার শাহানুর আলমের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। গোড়া ধর্মাবলম্বী একটি পরিবারের সদস্য হওয়ার সূত্রে সে তার আশপাশ অঞ্চলের যুবকদের ধর্মীয় প্রবচনের মাধ্যমে আকর্ষিত করে তার অভীষ্ট পথে নিয়ে আসতে ব্যস্ত ছিল।২০১১ সালে দৌলাশাল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতায় পাড়ি দেয় শহিদুল। কলকাতার আমবাগান খরিসা মাদ্রাসায় শিক্ষা নিতে ভরতি হয় সে। গত সোমবার বর্ধমানে গ্রেফতার আইসিস সদস্য মসিউদ্দিন ওরফে মুসার সঙ্গে শহিদুলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শহিদুলও মুসার ১২ জনের কোর গ্রুপের সদস্য ছিল কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে নিয়া। গ্রেফতার মুসা-ই পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে ঘাঁটি গাড়ার পরিকল্পনা করছিল কিনা তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী সংস্থার কাছে খবর আছে, মুসা-র হাতে হাওয়ালার মাধ্যমে সিরিয়া এবং ইরাক থেকে দেদার টাকা আসত। সেই টাকায় পশ্চিমবঙ্গ তার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে জেহাদির ঘাটি করার উদ্দেশ্যে তামিলনাড়ু থেকে পশ্চিমবঙ্গে আসে সে। সোমবার রাতে বর্ধমান স্টেশনে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে সে তার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে বলে নিয়া-র এক সূত্রের খবরে প্রকাশ। তার জবানবন্দিতে সে জানিয়েছে, তার কোর গ্রুপে অসমের এক যুবকও শামিল আছে। অসমের এই যুবক শহিদুলই কি না তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে।নিয়া-র মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জনৈক জেহাদি না সিরুল্লাহ ওরফে সাহাদত শেখ ওরফে হাতকাটা নামের দুর্ধর্ষ এক বোমা বিশেষজ্ঞের নাম। বোমা পরীক্ষার সময়ই তার একটি উড়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।ইতিমধ্যে কোনও জেএমবি সদস্যের ঠিকানা দিতে পারলে দশ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে নিয়া।-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *