নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, চড়িলাম, তেলিয়ামুড়া, ৯ জুলাই৷৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে তিনজনের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে৷ প্রতিটি ঘটনারই পুলিশ মামলা নিয়েছে৷ তদন্ত করে দেখছে পুলিশ৷
রাজধানী আগরতলা শহরে এক ব্যক্তি খুন হয়েছে৷ খুনের পর মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে রাস্তার পাশের ড্রেনে৷ নিহত ব্যক্তির নাম গৌর দে (৪৫)৷ বাড়ী রাধানগর এলাকায়৷ পেশায় বেকারির ব্যবসায়ী৷ সংবাদে প্রকাশ, শনিবার সকালে রাধানগরে পেট্রোল পাম্পের পাশের ড্রেনে গৌর দে’র মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় জনগণ৷ সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জি বি হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ পরে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ নিকটাত্মীয়দের হাতে তুলে দেয় পুলিশ৷ এই ঘটনায় রাধানগর সহ আশেপাশের অঞ্চলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে৷
অন্যান্য দিনের মতো শনিবার সকালে ফুল তোলার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় গৌর দে৷ তিনি ফুল তুলে আর বাড়ি ফিরে যাননি৷ িেদন সকারে তার মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয় জনগণ৷ এলাকাবাসীর বক্তব্য স্থানীয় অন্নপূর্ণা বেকারি তাদের নিজের হলেও তিনি অন্য একটি ফাস্টফুডের দোকানে কাজ করতো৷ মাঝে মধ্যে মদ্যপান করত৷ কিন্তু তা কখনই মাত্রায় অতিরিক্ত ছিল না৷ এদিন ড্রেনে উদ্ধার হওয়া গৌর দে’র মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ণ পাওয়া গিয়েছে৷ তাছাড়া এই ছোট ড্রেইনে পড়ে মৃত্যুর ঘটনাও অবাঞ্ছিত৷ যদিও পুলিশের বক্তব্য মদ্যপান করেই তার মৃত্যু হয়েছে৷ পুলিশের এই বক্তব্যে স্থানীয় জনমনে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে৷ এলাকাবাসীর অভিমত এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড৷
এদিকে, শনিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সিপাহিজলা অভয়ারণ্যের নৌকাঘাট সংলগ্ণ স্থানে এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ যুবকের মাথা থেতলে রযেছে৷ মৃত যুবকের নাম রূপক ঘোষ৷ বাড়ি অমরপুর ক্ষুদিরাম পল্লি এলাকায়৷ সে পেশায় মিষ্টির দোকানের মালিক৷ জানা যায়, রূপক ঘোষ শুক্রবার সেকেরকোটে মামার বাড়িতে আসে পাত্রী পছন্দ করার জন্য৷ এই দিন মামার বাড়িতে রাত কাটায়৷ কিন্তু পরের দিন সকালে যখন বাইক নিয়ে বের হয় তখন নৌকাঘাট এলাকায় তার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়৷
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে এটি একটি দূর্ঘটনা৷ সিপাহিজলা নৌকাঘাট এলাকায় কোন এক অজানা একটি দ্রুতগামী গাড়ি বাইকটিকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়৷ বাইকটির নম্বর টিআর০৩সি-৬৫৮৯ নম্বরের বাইক থেকে ছিটকে পড়ে আরোহী রূপক ঘোষ৷ তার মাথার উপর দিয়ে গাড়ির চাকা যাওয়ায় খুলি ছিটকে পড়ে অন্যত্র৷ রক্তাক্ত অবস্থায় ঘন্টাখানেক তার নিথর দেহ রাস্তার মাঝখানে পড়ে থাকে৷ দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকটি পড়ে থাকে রাস্তার পাশে৷ সেখানে দমকল বাহিনীর জওয়ানরা থাকলেও পুলিশের উপস্থিতির দেখা নেই৷ দীর্ঘ ঘন্টাখানেক পরে পুলিশ এলে মৃত রূপক ঘোষের দেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়৷ পরবর্তী সময়ে তার আত্মীয়স্বজনরা খবর পেয়ে বিশালগড় থানায় একটি মামলা করেন যার নম্বর বিএলজি৭৬/১৬৷ এদিকে এই যুবকের মৃত্যুকে নিছক দূর্ঘটনা বলে মেনে নিতে নারাজ পরিবারের লোকজন৷ যদি দূর্ঘটনায় ঐ যুবকের মৃত্যু হত তাহলে বাইকের ক্ষতি হতো৷ কিন্তু বাইকটির কোন ক্ষতি হয়নি৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রণয় সংক্রান্ত কোন ঘটনার জেরে ঐ যুবককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে৷
অন্যদিকে, তেলিয়ামুড়া থানাধীন ত্রিশাবাড়ী রেলস্টেশন এলাকায় পাওয়া গেল এক অপরিচিত ব্যক্তির মৃতদেহ৷ ঘটনা শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ৷ তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে তেলিয়ামুড়া গ্রামীন হাসপাতালের নিয়ে আসে৷ সেখানেই মর্গে রাখা হয়েছে তার দেহ থাকবে ৭২ ঘন্টা৷ খোয়াই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তার মৃত দেহ সনাক্ত করনের জন্য দেওয়া হবে বিজ্ঞাপ্তি এর পরই ময়না তদন্ত শেষে মহকুমা শাসকের পক্ষ থেকে তার সৎকারের ব্যাবস্থা করা হবে যদি তার মৃতদেহের দাবীদার না থাকে৷
এলাকা বাসীর বক্তব্য দীর্ঘ প্রায় ১০-১২ দিন নাগাদ রেলস্টেশন এলাকায় তাকে ঘুরতে দেখা যায়৷ সে খুবই অসুস্থ ছিল৷ তার একটি পা-যে পচন ও ধরে যায়৷ এলাকাবাসী যে যার মত তাকে খাবারও দিত৷ তবে গতকাল রাতে ঐ এলাকার একটি যাত্রী শেডে তার মৃত্যু হয়৷ এলাকাবাসী সকালবেলা তার মৃতদেহ দেখতে পেয়ে খবর দেয় তেলিয়ামুড়া থানায়৷ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসে৷
অপরদিকে একই দিনে জিরানীয়া থানার অন্তগত বড়মুড়া পাহাড়ের বন কুমারী মন্দিরের সামনে থেকে আরো এক ব্যাক্তিকে অর্ধ মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে তেলিয়ামুড়া অগ্ণিনিবাপক দপ্তরের দমকল বাহিনী৷ জানা যায় সকাদ্ভ্রল ৭টা কুড়ি মিনিট নাগাদ দপ্তরের ফোন আসে একটি অপরিচিত দেহ পরে আছে বড়মুড়ার আসাম আগরতলা জাতীয় সড়কের পাশে৷ তারা সেখানে থেকে তাকে উদ্ধার করে তেলিায়মুড়া গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে এলেও তার চিকিৎসার ভাব বহন করার মত কেউ ছিল না৷ হাসপাতাল থেকে শুরু করে পুলিশ ও মহকুমা প্রশাসন৷ অপরদিকে বিনা চিকিৎসায় তার অবস্থা মৃত্যুর কোলে ঢলে যাচ্ছিল৷ খবর পেয়ে ছুটে আসে জিরানীয়া থানার ওসি বাবু তেলিয়ামুড়া হাসপাতালে৷ কোন ভাবেই এই বয়স ষাটের অপরিচিত ব্যাক্তির দিকে সাহায্যের হাত না বাড়িয়ে সোজা চলে যান জিরানীয়া৷ শেষ পর্যন্ত আগরতলা জিবিতে তার চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা হয়৷
2016-07-09