আগরতলা, ১৪ ডিসেম্বর: ত্রিপুরা ট্যুরিজম প্রমো ফেস্ট-২০২৪ উপলক্ষে ন্যাশনাল ট্র্যাভেল মার্টে রাজ্যের পর্যটন সম্ভার ও পর্যটন শিল্পের বিকাশে রাজ্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। আজ দুপুরে গীতাঞ্জলি পর্যটক আবাসে অ্যাসোসিয়েশন অব ডোমেস্টিক ট্যুর অপারেটরসদের নিয়ে এই ন্যাশনাল মার্টের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে বিজনেস টু বিজনেস আলোচনায় বহিরাজ্যের ট্যুর অপারেটরগণ অংশগ্রহণ করেন। দেশের ১৬টি রাজ্যের ৮০ জন প্রতিনিধি এই আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি গ্রহণ করার ফলে রেল, সড়ক, বিমান পরিষেবা সহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তাছাড়াও পর্যটন ক্ষেত্রের পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটানো হচ্ছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব ডোমেস্টিক ট্যুর অপারেটরসদের ন্যাশনাল মার্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন অনেক ভালো। দেশের ২৮-টি রাজ্যের মধ্যে সর্বনিম্ন দিক থেকে ৩য় স্থানে রয়েছে। রাজ্যে শান্তির পরিবেশ থাকায় পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পেয়েছে। আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই ত্রিপুরাকে দেশ ও বিশ্বের দরবারে পরিচিতি দিতে। এজন্য সর্বভারতীয় ট্যুর অপারেটরসদের সাহায্য ও সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি বলেন, স্বদেশ দর্শন, প্রসাদ প্রকল্পে মাতাবাড়ির সামগ্রিক উন্নয়নে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। ঊনকোটিকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণার জন্য নথিবদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকদের থাকার জন্য সারা রাজ্যে প্রায় ৪১টি লগহাট ও হোম স্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় নীরমহল, কসবা, ছবিমুড়ার পরিকাঠামো উন্নয়ন সহ নানাবিধ কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও ত্রিপুরার ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরা হচ্ছে। রাজ্যের জনজাতিদের আলাদা আলাদা কৃষ্টি সংস্কৃতি এ রাজ্যের পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ। পর্যটনের মাধ্যমে রাজ্যের জিএসডিপিও বেড়েছে।
অনুষ্ঠানে পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, রাজ্যে আগে পর্যটন ক্ষেত্রটি উপেক্ষিত ছিল। রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত হচ্ছে। আগামীদিনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আমাদের জম্পইহিল, ডম্বুর লেক, নীরমহল ও মাতাবাড়ির মতো অনেক আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে, যা দেশের অন্যান্য প্রান্তে অবস্থিত পাহাড় ও লেকের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। আগামীদিনে রাজ্যের পর্যটন শিল্পের বিকাশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ট্যুর অপারেটরসদের সাথে এই আলোচনা সহায়ক ভূমিকা নেবে। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, সবাই মিলে আমরা ত্রিপুরাকে দেশ ও বিদেশের পর্যটকদের কাছে রাজ্যের বৈচিত্র্যময় পর্যটন সন্তারকে তুলে ধরতে চাই। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশন অব ডোমেস্টিক ট্যুর অপারেটর অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট বেদ প্রকাশ। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা পর্যটন দপ্তরের সচিব ইউ কে চাকমা।