আগরতলা, ২৯ নভেম্বর: প্রাণীসম্পদকে ভিত্তি করে রাজ্যে কর্মসংস্থানে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই লক্ষ্যে প্রাণীজ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মান নিধির দ্বিতীয় পর্যায়ের আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.)
মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাণীপালকদের সহায়তায় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প প্রাণীপালকদের উৎসাহিত করছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীসম্পদ বিকাশ যোজনা বাস্তবায়নে ২০২৪- ২৫ অর্থবর্ষে প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরকে ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রাণী পালক কৃষকদের সম্মান ও প্রাণী পালনে তাদের উৎসাহিত করতে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে প্রায় ৫ হাজার প্রাণীপালক পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মান নিধির মাধ্যমে সম্মাননা প্রদান করা হবে। সম্মাননা হিসেবে তাদের ৬ হাজার টাকা ডিবিটির মাধ্যমে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মান নিধির দ্বিতীয় পর্যায়ের আর্থিক সহায়তা প্রাণী পালক সুবিধাভোগীদের হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীসম্পদ বিকাশ যোজনায় ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৩,০০৬টি প্রগতিশীল প্রাণীপালক পরিবারকে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মান নিধি সম্মাননার মাধ্যমে পরিবার পিছু ৬ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীসম্পদ বিকাশ যোজনার অন্তর্গত হাঁস ও পোলট্রি প্রতিপালন প্রকল্পে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ৩৬ হাজার পরিবারকে সহায়তা করা হবে। কাফ গ্রোথ মিল স্কিমে সরকারি সহায়তা প্রদান সহ আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণী পরিবারে গৃহপালিত পশু বা পাখির অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর প্রাণীপালকদের সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেওয়ার সংস্থানের কথাও মুখ্যমন্ত্রী এদিন উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাণীসম্পদের টিকাকরণ, চিকিৎসা, রোগ প্রতিরোধমূলক পরিসেবা প্রদানে রাজ্যে ১৬টি ভেটেরিনারি হাসপাতাল, ৬৫টি ভেটেরিনারি ডিস্পেনসারি এবং ৪৬০টি ভেটেরিনারি সাব সেন্টার রয়েছে। তাছাড়াও প্রায় ১৩টি ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ইউনিট চালু রয়েছে। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী উন্নত গোধন প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৩০টি কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন করানো হয়েছে। এরমধ্যে জনা নেওয়া ৫৪ হাজার ৮৫২টি বাছুরের মধ্যে স্ত্রী বাছুর রয়েছে ৪৬ হাজার ৪৬১টি যা অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
অনুষ্ঠানে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, প্রাণী পালনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে মুখ্যমন্ত্রী প্রাণীপালক সম্মাননিধি প্রকল্পটি চালু করা হয়। তাছাড়া গৃহপালিত পশু পাখির অস্বাভাবিক মৃত্যুতে প্রাণীপালক কৃষকদের সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাণীপালকদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। পাশাপাশি মহিলাদের আত্মনির্ভরতার জন্য প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের আগামীদিনের পরিকল্পনার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার, ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার।