আগরতলা, ২৪ আগস্ট: রাজ্যে বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণ করা সম্ভব হবে। রেকর্ড পরিমাণ ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় শনিবার রাজ্য অতিথিশালায় আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে এই আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রীর পৌরহিত্যে আয়োজিত এই বৈঠকের শুরুতেই সাম্প্রতিক বন্যায় মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং তাদের মূল্যবান পরামর্শ চেয়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সকলের কাছে সহযোগিতার আহ্বান রাখেন তিনি। এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা বলেন, বন্যায় রাজ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সর্বদলীয় কমিটি গঠন করে কেন্দ্রের সাথে আর্থিক সহায়তার দাবি তোলার প্রস্তাব দিয়েছি। বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সতর্কতা জারিতে আবহাওয়া দফতরের কিছুতে বিলম্ব হয়েছে। আগামীদিনে এই বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে সময়মত আগাম সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছি। তবেই, আজকের সর্বদলীয় বৈঠক সার্থক হবে বলে মনে করছি।
সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধু দক্ষিণ জেলার অন্তর্গত বকাফায় ৪৯৩ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বন্যার দরুণ পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে যায়। ত্রিপুরার সব নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে কথা বলার সময় তিনি আমাকে হেলিকপ্টার এবং অতিরিক্ত এনডিআরএফ টিম পাঠানো সহ সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন। আমাদের প্রশাসন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে এবং উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। বর্তমানে গোমতী নদী ছাড়া সব নদীই বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, ২ জন নিখোঁজ এবং ২ জন আহত হয়েছেন। এই ২৪ জনের মধ্যে ১৮ জন ভূমিধসে মারা জন, ৫ জন জলে ডুবে মারা যান এবং ১ জনের বাড়ি ধ্বসে মৃত্যু হয়েছে।