BRAKING NEWS

বীরভূমে সবুজের জয়জয়াকার

বোলপুর, ৪ জুন (হি. স.) : বীরভূম লোকসভার দুটি লোকসভায় জয়জয়াকার তৃণমূল কংগ্রেসের। বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মাল ৩,২৩, ১৯২ ভোটে বিজেপির নিকটতম বিজেপি প্রার্থী পিয়া সাহার থেকে এগিয়ে যান। অন‍্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শতাব্দী রায় নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দেবতনু ভট্টাচার্যর থেকে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার চার ভোটে জয়ী হন।

সোমবার বিকেলেই বোলপুরে চলে আসেন অসিত মাল। মহাদেবের ভক্ত তিনি। সকালেই মহাদেবের পুজো করেই বোলপুর কলেজ গণনাকেন্দ্রে চলে আসেন তিনি। বেলা বাড়তেই তাঁর জয়ের রাস্তা প্রশস্ত হয়ে ওঠে। কর্মীদের উচ্ছ্বাস, বাদ‍্যের সঙ্গে সবুজ আবিরে একাকার হয়ে যায় চারিদিক। প্রতি রাউণ্ডে বিপক্ষ প্রার্থীর থেকে জয়ের মার্জিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় তিনি নিশ্চিত হয়ে যান এবার জয়ের মার্জিন আগের লোকসভা থেকে বাড়ছে। ১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রামপ্রসাদ দাস কে ১,০৬, ৪০৩ ভোটে পরাজিত করেন অসিত মাল। এবার প্রায় দেড় লক্ষ ভোটে তিনি জয়ী হন তিনি। দলীয় কর্মীদের জয়োল্লাসের মধ‍্যে তিনি গতবারের জয়ের কাণ্ডারি তথা দলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কথা বলতে ভোলেন নি তিনি। তিনি জানান, অনুব্রত মণ্ডলকে মিস করছেন তিনি। তার হাতেই বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের ভিত তৈরী সে কথা বলেন তিনি।

পাশাপাশি, এদিন তিনি কোর কমিটিকে এই জয়ের কারিগর বলে ধন‍্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই জয়ের কৃতিত্ত্ব অবশ‍্যই দলীয় সমস্ত কর্মীদের কিন্তু আসল কারিগর আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় এবং সেনাপতি অভিষেক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়। মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের উন্নয়ন এবং অভিষেক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের নবজোয়ারে দল আরও মজবুত হয়েছে এবং মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছে।

উল্লেখ্য, অকৃতদার অসিত মালের রাজনৈতিক জীবনে আত্মপ্রকাশ করেন ১৯৭৭ সালে। সেবার হাঁসন বিধানসভা কেন্দ্রে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। ১৯৮২ সালে কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করলেও ফের পরাজিত হন। ১৯৮৭ সালে ফের কংগ্রেস টিকিটে লড়াই করে প্রথম বিধায়ক হন। পরের দুবার পরাজিত হন আর সি পি আইয়ের কাছে। ১৯৯৬ সালের পর তাঁর জয়ের আশ্বমেধের ঘোড়া থামানো যায়নি। ২০০৯ সালে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিপিএমের রামচন্দ্র ডোমের কাছে ৯২৮৮২ ভোটে পরাজিত হন। ২০১১ সালে কংগ্রেস – তৃণমূল জোট গড়ে হাত প্রতীকে লড়াই করেন হাঁসনে। সেবারও জয়ী হন। এই জয়ের পর তৃণমূলের সাথে তাঁর সম্পর্ক ঘনিষ্ট হয়। রাজ্য খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়। ২০১২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসের ছয় মন্ত্রী তৃণমূল সরকার থেকে বেরিয়ে এলেও অসিতবাবু চেয়ারম্যান পদ ছাড়েননি। এনিয়ে কংগ্রেস দলের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এরপরেই ২০১৪ সালে ২১ জুলাই শহিদ মঞ্চে তৃণমূলে যোগদান করেন। অবশ্য তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের সঙ্গে অসিত মালের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। কারন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভা নেত্রী ছিলেন, সেই সময় অসিত মাল ছিলেন রাজ্য সহসভাপতি। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছের লোক ছিলেন অসিতবাবু। ২০১৬ সালে হাঁসন কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হিসেবে কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদের কাছে পরাজিত হন। তারপর ১৯ সালে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রে তিনি জয়ী হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *