নয়াদিল্লি, ৮ জানুয়ারি (হি.স.): সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় বিলকিস বানোর । বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার মামলায় নিজের রায়ই খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট । গুজরাট সরকারের আসামীদের মুক্তির সিদ্ধান্তকে ভুল বলে, ১১ জন আসামীকেই আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে ।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিলকিস বানো মামলার শুনানি হচ্ছিল। বিলকিস বানোকে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ১১ জনকে ২০২২ সালে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিলকিস বানো। সোমবার এই মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে গুজরাট সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপব্যবহার করেছে গুজরাট। জালিয়াতি উপায়ে, তথ্য গোপন করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গুজরাটের মনে রাখা উচিত ছিল, একমাত্র মহারাষ্ট্র সরকারের এক্তিয়ার আছে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি পাওয়া ধর্ষকদের আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালের আইন অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা ন্যূনতম ১৪ বছর তার বেশি সময় সাজা কাটানোর পর তাঁদের আচরণের ভিত্তিতে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে সেই রেহাইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় কোর্ট। তার পরেই ২০২২ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, অপরাধীদের আগাম জামিন দেওয়া যেতে পারে। উল্লেখ্য়, গুজরাট দাঙ্গার পরে এই সংক্রান্ত সমস্ত মামলা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মহারাষ্ট্রে, যেন তদন্ত প্রভাবিত না হয়।
এহেন পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় বিলকিসের ধর্ষকদের একজন। রাধেশ্যাম ভগবানদাস শাহের আবেদন ছিল, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেন তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। মহারাষ্ট্র সরকারের কাছেও একই আবেদন জানান তিনি। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে কোনও জবাব আসার আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে গুজরাট সরকার চাইলে মুক্তি দিতে পারে বিলকিসের ধর্ষকদের। সেই রায়ের ভিত্তিতেই ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট মুক্তি পায় ১১ ধর্ষক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিলকিস বানো গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। ১১ দিনের শুনানির পর গত অক্টোবর মাসে এই মামলার রায় সংরক্ষিত রাখে বিচারপতি বিভি নাগারত্ন ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চ। এ দিন শীর্ষ আদালতের তরফে গুজরাট সরকারের বিলকিস বানোর ১১ ধর্ষককে মুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।