কলকাতা, ২৪ নভেম্বর (হি.স.): পশ্চিমবঙ্গে মিড ডে মিল প্রকল্পের তহবিল তছরূপ হয়েছে বলে অনেক দিন ধরে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার তিনি দাবি করেছেন, তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত চেয়ে এজেন্সির কাছে চিঠি দিয়েছে। এমনিতেই নিয়োগ ও রেশন দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে রয়েছে। এবার মিড ডে মিল জুড়লে নতুন মাত্রা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী হলেন ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি আবার পশ্চিমবঙ্গে চারটি লোকসভা আসনের সাংগঠনিক ও নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ের পর্যবেক্ষকও বটে। তাই অনেকে এই বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন।
মোদী জমানায় মিড ডে মিল প্রকল্পেরও নাম বদল করা হয়েছে। এই প্রকল্পের এখন পোশাকি নাম পিএম-পোষণ প্রকল্প। শুভেন্দুবাবুর অভিযোগ, মিড ডে মিলের টাকা অন্য খাতে খরচ করা হয়েছে। যেমন বগটুই গণহত্যা কাণ্ডে পীড়িত পরিবারগুলিকে এই মিড ডে মিলের টাকা থেকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্য অবশ্য জানিয়েছে যে ওই টাকা মিড ডে মিলের তহবিলে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে শুভেন্দুবাবুর দাবি, তার কোনও প্রামাণ্য নথি নেই।
প্রসঙ্গত, মিড ডে মিলে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে এখনও সিবিআই তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ব্যাপারটা অনুরোধের স্তরে রয়েছে। তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক যদি সরকারি ভাবে আবেদন জানিয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত শুরু হওয়া সময়ের অপেক্ষা।
মিড মিল প্রকল্পে অনিয়মের ব্যাপারে এ বছরের গোড়ায় কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রককে চিঠি লিখেছিলেন শুভেন্দুবাবু। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্র পর্যবেক্ষক টিম পাঠিয়েছিল। সেই দলের সঙ্গে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি দল জুড়ে যৌথ পর্যালোচনা কমিটি তৈরি হয়।
শুভেন্দুবাবু এদিন দাবি করেন, ওই যৌথ পর্যালোচনা কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রক। কারণ, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে মিড ডে মিলের খরচ বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। সরকারি হিসাবে দেখানো হয়েছে, যত ছেলেমেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে ৯৬ শতাংশই মিড ডে মিল পেয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলনেতার দাবি, প্রকৃত কভারেজ এর চেয়ে অনেক কম। তা ছাড়া বছরের প্রায় সব কর্মদিবস স্কুল খোলা ছিল বলেও হিসাবে দেখানো হয়েছে। অন্তত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
তবে জয়েন্ট রিভিউ কমিঠির রিপোর্ট নিয়ে আগেই আপত্তি জানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে রিপোর্ট চূড়ান্ত করা হয়েছে। যৌথ রিভিউ কমিটিতে কেন্দ্রের সদস্যরা রিপোর্ট চূড়ান্ত করার আগে রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথাই বলেননি।