নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ৮ নভেম্বর : স্বসহায়ক গোষ্ঠীর মাধ্যমে মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের কেমন করে স্বাবলম্বী করে তোলা যায় তা নিয়ে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময় আলোচনা সভার মাধ্যমে সচেতন করার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তার বাস্তবায়ন করে দেখালেন যুবরাজ নগর আরডি ব্লকের আওতাধীন পশ্চিম তিলথৈ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ফয়জুন্নেসা।
২০১৫ সালে ১০ জনকে নিয়ে একটি স্বসহায়ক গোষ্ঠী বানিয়েছিল এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলা। অনেকে অনেক কিছু বলেছিল তখন পাশে থাকার মত লোকের অভাব ছিল। শুধুমাত্র ১০ জন মহিলা মিলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ময়দানে নেমেছিল যে তারা কিছু একটা করে দেখাবে । তখন তাদের মূলধন ছিল মাত্র ৬০০০ টাকা। ছাগল পালা দিয়ে শুরু করেছিল তাদের মিশনের সূত্রপাত।
তারপর ক্ষেতের জমিতে চাষাবাদ ,সবজি চাষ ,ধান, আলু, টমেটোর দিনে টমেটো চাষ সহ বিভিন্ন ধরনের চাস আবাদে নিজেদেরকে বিরোধী করে এগিয়ে চলছিল 10 জনের এই স্বসহায়ক গোষ্ঠী। মনের তাগিদ থাকলে যে পিছে ফিরে তাকাতে হয় না তা নিজেদের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মনোবৃত্তি দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে এই দশজন মহিলা। এই দশজন মহিলার মুখ্য ফয়জুন্নেসা বর্তমানে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে যথেষ্ট স্বাবলম্বী করে তুলেছে। নিজের স্বামীকে অটোরিকশা কিনে দিয়েছে ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়ে।
তাছাড়া রয়েছে মাছের জন্য বিশাল ফিশারী, চালাচ্ছে মুরগির ফার্ম। তাদের নিজেদের উদ্যোগে গ্রামে তৈরি করছে জৈব সার যা বিক্রি করে একটা বড় অংকের টাকা প্রতি বছর নিজেদের পকেটে আসছে। কৃষির সময়ে এই স্বসহায়ক গোষ্ঠী অর্থাৎ তাজমহল এস এইট জি অধীন ২০০ থেকে ২৫০ কৃষক প্রত্যহ তাদের অধিকৃত জায়গায় কাজ করে চলেছে। কোন ধরনের কৃষিজ সামগ্রীর অভাব হচ্ছে না এই তাজমহল এস এইচ জি অধীনে। শুধুমাত্র তাই নয় বিভিন্ন খেত খামার পরিদর্শন করে কোথায় কোন ঔষধ কি পরিমানে দিতে হবে অর্থাৎ পেস্টিসাইড ইনসেক্টিসাইড এর বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে এই গ্রুপের মুখ্য সংখ্যালঘু মহিলা।
কৃষি বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা এসে সরাসরি এদের পরামর্শ গ্রহণ করেন তাদের কাছ থেকে। এই গ্রুপের বাকি নয় জন প্রত্যেকের অবস্থা বর্তমানে বেশ স্বচ্ছল বলা যায়। যে সংখ্যালঘু মহিলাকে এক সময় সংখ্যালঘু সমাজ পর্দানুশীন করে এসেছিল আজ পর্দার বাইরে বাস্তবতার লড়াইয়ে তারাই দেখিয়ে দিচ্ছে নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে পরিবারকে কেমন করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তোলা যায়। একটা অংশের মানুষের মনে তাদের এই উন্নতি হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়ালেও বাস্তবে তা সমাজের পথপ্রদর্শক হয়ে মানুষের মনে এই দশজন জায়গা করে নিয়েছে। কেমন করে পর্দার বাইরে নিজেদেরকে সফলতার শিখরে উন্নীত করা যায় তাজমহল এস এইচ জি গ্রুপের মহিলারা তা দেখিয়ে দিচ্ছে। এরা এগিয়ে চলেছে স্বমহিমায় নিজ আলোকে আলোকিত হয়ে।