নয়াদিল্লি, ২১ আগস্ট (হি.স.): অবশেষে বন্ধুর কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণে অভিযুক্ত দিল্লির নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতরের অধিকর্তাকে সস্ত্রীক গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। এদিন সকালেই অভিযুক্ত প্রেমোদয় খাখাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল দিল্লি পুলিশ। অবশেষে এদিন বিকালে সস্ত্রীক প্রেমোদয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (২) (এফ), ৫০৯, ৫০৬, ৩২৩, ৩১৩, ১২০বি এবং পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানায়, ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও তার জেরে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার গর্ভপাত করানোর ঘটনায় ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল, ৫১ বছর বয়সি প্রেমোদয় খাখা এবং তাঁর স্ত্রী ৫০ বছর বয়সি সীমা রানি। দিল্লি পুলিশের সিনিয়ার আধিকারিক সাগর সিং খালসি বলেন, “নির্যাতিতার স্থানীয় অভিভাবক ছিল অভিযুক্তরা। কিশোরীকে ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রেমোদয় খাখা এবং ধর্ষণের পর নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার গর্ভপাত করানোর ঘটনায় অভিযুক্ত সীমা রানি।”
দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল ঘটনার তীব্র নিন্দা টুইট পোস্ট করেন। টুইটারে তিনি লেখেন, “মেয়েদের রক্ষা করা যার কাজ, সে যদি শিকারিতে পরিণত হয়, তাহলে মেয়েরা যাবে কোথায়! শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা উচিত।”
প্রসঙ্গত, দিল্লি শিশু সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক প্রেমোদয় খাখার বন্ধু ছিলেন নির্যাতিতার বাবা। ২০২০ সালের ১ অক্টোবর তাঁর মৃত্যু হলে বন্ধুর মেয়েকে নিজের বাড়িতে এনে রাখেন প্রেমোদয়। এরপর ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ এর জানুয়ারি পর্যন্ত ডেপুটি ডাইরেক্টর পদাধিকারী ওই ব্যক্তি নিজের বাড়িতেই বন্ধুর ওই নাবালিকা মেয়েকে লাগাতার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ভয়ে ঘটনার কথা কাউকে বলতে পারত না নাবালিকা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে চলতি মাসের গোড়ার দিকে। ওই নাবালিকা হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় তাকে সেন্ট স্টিফেন্স হাসপাতালে নিয়ে যান। তখনই চিকিৎসকদের সব ঘটনা খুলে বলে মেয়েটি। চিকিৎসকদের মেয়েটি জানিয়েছে, যখন সে গর্ভবতী হয়ে পড়েছিল তখন ওই সরকারি আধিকারিকের স্ত্রীকে জানায়। তিনি নিজের ছেলেকে দিয়ে গর্ভপাতের ওষুধ আনেন এবং তাকে খাওয়ায়। গোটা ঘটনায় দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া নাবালিকাটি বর্তমানে ‘প্যানিক অ্যাটাকে’ আক্রান্ত। বর্তমানে অবশ্য সে নিজের বাড়িতে মায়ের সঙ্গেই থাকে। সেন্ট স্টিফেন্স হাসপাতালের চিকিৎসকদের অধীনে তার শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা চলছে।