দুর্গাপুর, ১৭ জুলাই (হি. স.) গণনার দিন থেকে নিখোঁজ তৃণমূলের সক্রিয়কর্মীর রহস্যজনক মৃতদেহ উদ্ধার হল। সোমবার ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল বুদবুদে। খুনের অভিযোগ তুলেছ পরিবারের লোকজন। ঘটনার পুলিশি তদন্তের ওপর আস্থা তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বের।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মৃতের নাম চাঁদু বাউরী (৪১), গলসী-১ নং ব্লকের পোতনা গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় দিনমজুর। এবং দলের সক্রিয় কর্মী বলে দাবী তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক নেতৃত্বের। পরিবারে তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। ঘটনায় পরিবার সুত্রে জানা গেছে, গত ১১ জুলাই গণনার দিন বুদবুদে এসেছিলেন। দুপুরের পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। গত ১৩ জুলাই চাঁদু বাউরীর বড় ছেলে ধর্মেশ্বর বাউরী বুদবুদ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। অভিযোগে তিনি বলেন,” গণনার দিন বুদবুদে এসেছিলেন। দুপুরের পর আর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। বুদবুদ বাজার ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে খবর নেওয়া হয়। কিন্তু কোথাও কোনরকম খোঁজ পাওয়া যায়নি।”
সোমবার ভোরে বুদবুদে ১৯ নং জাতীয় সড়কের পাশে পথের সাথী হোটেল সংলগ্ন এলাকায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এদিন ভোরে জাতীয় সড়কের আশপাশের লোকজন মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পোতনা গ্রামেরই তৃণমূলের ব্লক নেতা তথা এবারের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী পার্থসারথী মন্ডল জানান,” চাঁদু বাউরী তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে সক্রিয়কর্মী। গণনার দিন বুদবুদে গিয়েছিল। সেখান থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কিভাবে মৃত্যু হল পুলিশ তদন্ত করুক।”
উল্লেখ্য, গত ১১ জুলাই গণনার দিন বুদবুদ মহাকালি স্কুলের সামনে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গননাকেন্দ্রে বিরোধী সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস প্রার্থীদের ঢুকতে বাধা ও মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনায় ৬ জন আহত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামে বিশাল পুলিশবাহিনী, কেন্দ্রীয়বাহিনী, কমব্যাট ফোর্স। বিরোধীদের অভিযোগ, বিরোধীদের ঢুকতে বাধা দিতে ও গননায় কারচুপি করতে প্রচুর জমায়েত করেছিল তৃণমূল। গোটা বুদবুদ বাজারে বিভিন্ন জায়গায় কয়েক হাজার লোকের জমায়েত ছিল। যদিও পুলিশ ও কেন্দ্রীয়বাহিনী ওই জমায়েত সরিয়ে দেয়। এমনকি বুদবুদ বাজারে একটি হোটেলে ঘাঁটি করে থাকা লোকজনদের বের করে দেয়। তবে এদিনের মৃত তৃণমূল কর্মীর কিভাবে মৃত্যু হল, তাই নিয়ে রহস্যের দানা বেঁধেছে।
চাঁদু বাউরীর ছোটো ছেলে পরমেশ্বর বাউরী জানান,” গণনা কেন্দ্রের আশপাশের এলাকা আমার খোঁজ করেছিলাম। সেদিন পাওয়া যায়নি। আজ সকালে মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পাই।” তিনি আরও বলেন,” আমাদের অনুমান বাবাকে হিংসা করে মেরে ফেলা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। এবং অপরাধীদের শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।” তৃণমূল কংগ্রেসের গলসী -১ নং ব্লক সভাপতি জনার্দ্দন চট্টোপাধ্যায় জানান,” চাঁদু বাউরী তৃণমূলকর্মী গণনারদিন বুদবুদে এসেছিল। গণনার দিন থেকে নিখোঁজ ছিল। কিভাবে মৃত্যু হল, ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোন মন্তব্য করব না। পুলিশ তদন্ত করছে।” এসিপি (কাঁকসা) সুমন জয়সওয়াল জানান, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”