ঝাড়গ্রাম, ৯ জুলাই (হি. স.): এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ ভোট দিয়েছে উৎসবের মেজাজে। তবে শাতাংশের বিচারে জেলার আটটি ব্লকে সমান ভাবে ভোট পড়েনি। জেলায় মোট ভোট পড়েছে ৮২. ৫০ শতাংশ। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ভোট পড়েছে ঝাড়গ্রাম ব্লকে। এখানে ভোট পড়েছে ৮৫.৯৩ শতাংশ। আর উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে সব থেকে কম ভোট পড়েছে গোপীবল্লভপুর দুই ব্লকে।এখানে ভোট পড়েছে ৭৮.৭৩ শতাংশ।
তবে ঝাড়গ্রাম জেলার মধ্যে একমাত্র ঝাড়গ্রাম ব্লকেই সব থেকে বেশি রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং গ্রামপঞ্চায়েতের আসন। আর ঝাড়গ্রাম ব্লকের পঞ্চায়েতে ভোটার সংখ্যা অন্যান্য ব্লকের তুলনায় অনেকটা বেশি। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কুড়মি আন্দোলনের ব্যাপাক প্রভাব পড়েছে। কুড়মি অধ্যুষিত অঞ্চল গুলিতে শাসক দল সহ অন্যান্য দল প্রচারে যাওয়া তো দূরে দলীয় পতাকাও তুলতে পারেনি। আর জেলার অন্যন্য ব্লকের তুলনায় ঝাড়গ্রাম ব্লকের বেশিরভাগ অঞ্চলই কমবেশি কুড়মি অধ্যুষিত। ব্লকের শালবনি,সাপধরা, মানিকপাড়া,সড়ডিহা,দুধকুন্ডি আগুইবনি অঞ্চল গুলি কুড়মি সমাজের মানুষদের বাস।এছাড়া রাধানগর, নেদাবহড়া অঞ্চল গুলিতে কুড়মি মানুষের বাস রয়েছে। ঝাড়গ্রাম ব্লকে মোট গ্রামপঞ্চায়েত রয়েছে ১৩ টি। মোট বুথ রয়েছে ১৭১ টি। আসন ১৬২ টি। মোট ভোটার ১৪৭১৭। পঞ্চায়েত সমিতির আসন রয়েছে ৩২ টা এবং জেলা পরিষদের আসন ৩ টি।
আর ঝাড়গ্রাম ব্লকে কুড়মিদের ভোট ব্যাঙ্ক একটা বড় ফ্যাকটর বলে মনে করা হচ্ছ।পঞ্চায়েতে এখানে নির্দল প্রার্থী আছে ১০৫ জন এবং সমিতিতে ২৭ জন। আর কুড়মি সম্প্রদায় অধ্যুষিত বুথ গুলিতে ভোট ব্যাপক হারে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আর ঝাড়গ্রামে সব থেকে বেশি ভোট পড়ার কারন হিসেবে এটা একটা ফ্যাকটর বলে মনে করা হচ্ছে। নির্দলরা এখানে বড় ফ্যাকটর বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে গোপীবল্লভপুর দুই ব্লকে সব থেকে কম ভোট পড়েছে। তবে জেলার মধ্যে এই ব্লক তুলনামূলক বেশ ছোট ব্লক।মোট গ্রামপঞ্চায়েত রয়েছে সাতটি। বুথ ১০৫ টি। গ্রামপঞ্চায়েতের আসন রয়েছে ৯৮ টি।পঞ্চায়েত সমিতি ২০ টি, জেলা পরিষদ ২ টি। আর এখানে ভোটার রয়েছে ৮৬৩২৮ জন। এখানে সমিতিতে ১৮ জন এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে ৬১ জন নির্দল রয়েছে অন্যান্য দলের পাশাপাশি। এই ব্লকটিতে জেলার অন্যান্য ব্লকের তুলনায় কুড়মি ফ্যাকটর নেই। তবে এখানে রয়েছে তৃণমূল অন্তর্দ্বন্দ্ব। এখনে এই দ্বন্দ্ব অত্যন্ত প্রকোট।দলের টিকিট না পেয়ে একটা বড় অংশ নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্লকের বহু পুরাতন নেতা,কর্মী বহিস্কৃত হয়েছেন। সেই সব নেতাদের অনগামীদের অনেকেই ভোটে দাঁড়িয়েছেন। আর এই ঘটনায় দলের সাধারণ কর্মীরাও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তারা দলের প্রতিকের প্রার্থীকে ভোট দেবেন না কি দলের বিক্ষুব্ধদের দেবেন তা নিয়ে দোলাচল ছিল। আর এই দোলাচলে অনেকে ভোট দিয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।