BRAKING NEWS

ষষ্ঠ দিনেও বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে ফ্রান্স, বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আরজি নিহত কিশোরের দিদার

প্যারিস, ৩ জুলাই (হি.স.) : পুলিশের গুলিতে ১৭ বছরের কিশোর নাহেলের খুন হওয়ার প্রতিবাদে গত ৬ দিন ধরে অগ্নিগর্ভ ফ্রান্স। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই অভিযোগ করেছেন প্রতিবাদের নামে কার্যত দাঙ্গা চলছে সেখানে। পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে যানবাহন। হামলা চালানো হচ্ছে ব্যাংক ও গ্রন্থাগ্রারেও। এহেন পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার আরজি জানালেন পুলিশের গুলিতে নিহত কিশোর নাহেলের দিদা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এভাবে দোকানপাট, যানবাহন, স্কুলকলেজ ধ্বংস করে কোনও সমাধান হবে না। এমনটা চান না তাঁরা। নাদিয়া আরও বলেন, ‘দাঙ্গাকারীরা এখন নাহেলের মৃত্যুকে কেবল অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। আমরা চাই পরিস্থিতি শান্ত হোক।’
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার। অভিযোগ, ট্রাফিক আইন অমান্য করে নাহেল এম নামের ১৭ বছরের এক কিশোর। প্যারিসের পাশে অবস্থিত নঁতের অঞ্চলে পৌঁছয় সে। সেই সময় কয়েকজন পুলিশকর্মী তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের মধ্যে একজন বন্দুক তাক করে ছিলেন। তারপর সেই কিশোর পালানোর চেষ্টা করলে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করেন সেই পুলিশকর্মী। মৃত্যু হয় কিশোরের। এরপরই উত্তাল হয়ে ওঠে ফ্রান্স।

শনিবার সমাহিত করা হয়েছে নাহেলকে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মী নিহতের পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু তাতেও বিক্ষোভ কমার কোনও লক্ষণ নেই। ষষ্ঠদিনেও হিংসা অব্যাহত। হিংসা থামানোর আরজি জাানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো। রক্ষা পাচ্ছেন না হাই প্রোফাইলরাও। গত শনিবার রাতে প্যারিসের দক্ষিণের এক শহরের মেয়রের বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। তাতে আহত হন তাঁর স্ত্রী ও সন্তান। এই পরিস্থিতিতেই বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানালেন নাহেলের দিদা।
রবিবার ফ্রান্সের এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন নাহেলের দিদা নাদিয়া। ওখানেই তিনি অনুরোধ করেন, “দয়া করে বাড়িঘর ভাঙবেন না। বাসে আগুন লাগাবেন না। স্কুলে হামলা চালাবেন না। এইসব বন্ধ করুন। আমরা শান্তি চাই।” তিনি আরও বলেন, তাঁর ক্ষোভ শুধুমাত্র ওই অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর উপর। যে তাঁর নাতিকে হত্যা করেছে। পুলিশ প্রশাসনের ওপর তাঁর ক্ষোভ নেই। বিচারব্যাবস্থার প্রতি তাঁর আস্থা আছে।

অন্যদিকে, এই বিক্ষোভের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দেড় হাজারের ওপর বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন বহু পুলিশকর্মীও। এই দাঙ্গার কারণে সরকারি হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অনেক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪৫ হাজার সেনাও মোতায়ন করা হয়েছে। এই বিষয়ে রবিবার বিকালে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো জরুরি বৈঠকও করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *