করিমগঞ্জ (অসম), ২৬ জুন (হি.স.) : শান্তিপূর্ণভাবে ইদ-উদ-জোহা উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন। করিমগঞ্জ জেলায় আসন্ন ইদ-উদ-জোহা উৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ সোমবার জেলাশাসকের কার্যালয় সভাকক্ষে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।
করিমগঞ্জের জেলাশাসক মৃদুল যাদবের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস, ডিএসপি সদর গীতার্থ দেবশর্মা সহ জেলার বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদ কমিটির কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। এতে করিমগঞ্জের এডিসি আনিস রাসুল মজুমদার গত বছরের ইদ-উদ-জোহা উদযাপনের জন্য গৃহীত বিভিন্ন কার্যসূচি পাঠ করেন সভাকে শোনান।
বৈঠকে জেলাশাসক সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ইদ-উদ-জোহা উৎসব অনুষ্ঠিত করতে সবাইকে নিয়মনীতি মেনে চলার বার্তা দিয়েছেন। এছাড়া তিনি কোনও প্রকাশ্য স্থানে কোরবানি না দেওয়ারও আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি বলেন, কুরবানি যেখানে দেওয়া হবে, তার আশপাশে অবশিষ্ট বর্জ্য গভীর গর্ত খুড়ে ভালোভাবে পুতে ফেলতে হবে। কোরবানির মাংস পরিবহণ না করে ওই স্থানেই নিজেদের মধ্যে বিতরণ করতে আহ্বান জানান জেলাশাসক। এছাড়া জেলায় কোনও অবৈধ পশুবাজার চললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ সুপারকে বলেন তিনি।
এদিনের বৈঠকে পুলিশ সুপার বর্তমান পরিস্থিতিতে জেলা সহ সমগ্র বরাক উপত্যকায় চলমান বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে যাতে এই উৎসব পালনের সঙ্গে মিশে কোনও অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তার জন্য উপস্থিত সবাই এবং অবশ্যই জেলাবাসীকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশনে জানাতে অনুরোধ করেন।
পুলিশ সুপার জানান, ইদ-উদ-জোহা উপলক্ষ্যে করিমগঞ্জ জেলায় ২৪ ঘণ্টা একটি কন্ট্রোলরুম খোলা থাকবে। কন্ট্রোলরুমের নম্বর ৮০৯৯৬৬২২৭৫-। এই নম্বরেও আইন-শৃঙ্খলাজনিত যে কোনও খবর প্রেরণ করতে বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইদ-উদ-জোহা উৎসব পালনের সময় যাতে অন্য ধর্মাবলম্বী জনগণের ভাবাবেগে কোনও ধরনের আঘাত না আসে তার প্রতিও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সভায় ডিএসপি গীতার্থ দেবশর্মা গবাদি পশু আইন সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, কোরবানির পর অবশিষ্ট বর্জ্য সর্বাবস্থায় গভীর গর্ত খুড়ে ভালোভাবে ঢেকে দিতে হবে। সভায় অংশগ্রহণ করে জেলা পরিবহণ আধিকারিক সাহাব উদ্দিন তাপাদার উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং এ ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনও ধরনের কোরবানির দৃশ্য বা উস্কানিমূলক দৃশ্য পোস্ট করা যাবে না। এ থেকে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলাশাসক এই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে উপস্থিত সবাই ও জেলাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
এদিকে বৈঠকে দৈনিক নববার্তা পত্রিকার সম্পাদক ও করিমগঞ্জ ঈদগাহ কমিটির সচিব হবিবুর রহমান চৌধুরী কোরবানির জন্য পশু পরিবহণের সময় বৈধ রসিদ মজুতধারী ব্যক্তিকে যাতে হয়রানি করা না হয় সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে পুলিশ সুপার জানান, এ ধরনের কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে যাতে তৎক্ষণাৎ নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশন অথবা কন্ট্রোলরুমে জানানো হয়।
সভায় জেলাশাসক প্রতিটি ঈদগাহ ও মসজিদ কমিটির কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক এই বার্তাগুলি নিজ নিজ এলাকার জনগণকে জানিয়ে দিতে আহ্বান জানান।
আজকের বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে রামকৃষ্ণনগরের চক্র আধিকারিক সতীশ প্রসাদ, বদরপুরের চক্র আধিকারিক কিমনেইনেম চাংসন প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।