কলকাতা, ২০ জুন (হি. স.) : বিতর্কের মধ্যে মঙ্গলবার রাজভবনে পালিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ দিবস। তা নিয়ে এসএসকেএমে দাঁড়িয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তোপ দাগলেন রাজ্যপাল, বিজেপির বিরুদ্ধে। মমতার সাফ দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন না করার জন্য ফোনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে আরজি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । শুধু তাই নয়, চিঠি লিখেও রাজভবনের এহেন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ আচমকাই এসএসকেএমে চলে আসেন মমতা। এসেই বলেন, আজ নবান্নে কেউ ছিল না। কাজ না থাকায় এখানকার ডাক্তারদের সঙ্গে একটু সময় কাটাতে আসি। রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানাই। তারপরই সরাসরি চলে যান পশ্চিমবঙ্গ দিবসের প্রসঙ্গে। একের পর এক তোপ দাগতে থাকেন রাজ্যপাল ও বিজেপিকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দেন, “চিঠি দিয়ে এই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন না করতে বলেছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এসব পালন করা হচ্ছে। বাংলাকে অপমান করতে, অসম্মান করতেই বিজেপি এসব করছে। বাংলার মানুষের সঙ্গে রাজনীতির খেলা খেলা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, বামফ্রন্ট কিংবা কংগ্রেস আমলেও কোনওদিন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করা হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, তাহলে কেন আচমকা বিজেপি এই দিনটিকে আলাদা করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে? রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
২০ জুনের গুরুত্ব বঙ্গবাসী কতখানি জানে, তা নিয়ে সন্দিহান ইতিহাসবিদরাও। তবে সেই ২০ জুনই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করার কথা ঘোষণা করা হয় রাজভবনের তরফে। এদিন সকালে রাজভবনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। অন্যদিকে বিধানসভা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে মিছিল বের করে বিজেপিও। আসলে ১৯৪৭ সালের ২০ জুন অখণ্ড বাংলার প্রাদেশিক আইনসভার ভোটাভুটিতে দুই বাংলা ভাগের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল। যদিও ইতিহাসবিদের একাংশের মতে, সেই ভোটাভুটির আগে ৩ জুনই ব্রিটিশ সরকারের দেশভাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে বাঙালির ইতিহাস কিংবা সংস্কৃতিতে এমন দিনের বিশেষ গুরুত্ব শোনা যায় না। কিন্তু বাংলায় এসে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’কে আলাদা করে তুলে ধরতে চেয়ে এ রাজ্যের ঐতিহ্যকে নষ্ট করারই চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল।