ক্যানিং, ২০ জুন (হি. স.) : মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বারে বারে অশান্ত হয়েছে ক্যানিং। গত ১৪ই জুন মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় তৃণমূলের এক পক্ষের উপর হামলা চালায় আরেক পক্ষ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় ক্যানিং হাসপাতাল মোড় চত্বরে। গুলি, বোমার লড়াই হয়। অভিযোগ এই ঘটনার পর মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বহু তৃণমূল কর্মী। আর সেই কারণে হাইকোর্টের কাছে ক্যানিংয়ের হাটপুকুরিয়া এলাকার তৃণমূল নেতা তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান মামলা করেন সোমবার। সেই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। আই সি ক্যানিং, এসডিপিও ক্যানিং, বিধায়ক পরেশরাম দাস সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্তের জন্য এসপি বারাসতকে নির্দেশ দিয়েছেন একজন দক্ষ অতিরিক্ত পদ মর্যাদার পুলিশ অফিসারকে নিয়োগ করার। সিরাজ বলেন, “ সেদিন আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদেরকে মনোনয়ন জমা দিতে যেতে দেবেন না বলে বিধায়কের লোকজন লাঠি, রড, বোমা বন্দুক নিয়ে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে জমায়েত করেছিল। আমরা পুলিশের কাছে আবেদন জানাই আমাদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য। কিন্তু পুলিশ তা করেনি। আমরা প্রতিবাদে রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভ করলে আমাদের উপর বিধায়কের লোকেরা হামলা চালায় বোমা, বন্দুক নিয়ে।” তিনি আরও বলেন, “ ঘটনায় আমাদের লোকজন জখম হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশ সেসময় যারা বোমা মারল, গুলি চালাল তাঁদেরকে গ্রেফতার না করে আমাদের লোকজনকেই লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারল, গ্রেফতার করল ও আমাদের বিরুদ্ধেই মামলা করলো। বিধায়কের নির্দেশেই পুলিশ এসব করছে।” এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন তিনি বলে জানান সিরাজ। সেদিনের ঘটনার পর সিরাজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীও তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। এদিনের মামলার শুনানিতে আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছেন মামলাকারী এসপি বারুইপুরের কাছে নিরাপত্তার আবেদন করবেন। তার বাড়ির সামনে দুজন সশস্ত্র কনস্টেবল এক সপ্তাহের জন্য পাহারায় দিতে হবে। পাশাপাশি ক্যানিংয়ের বিডিও অফিস, হাসপাতাল মোড় সহ আশপাশের এলাকার ১৩ থেকে ১৬ জুনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। ওই ফুটেজ তদন্তকারী অফিসারকে দিতে হবে। আগামী ১২ জুলাই ওই তদন্তকারী অফিসারকে দুটি মামলার তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। আদালতের এই নির্দেশ সম্পর্কে এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাস বলেন, “ এরকম কোন নির্দেশ এখনো পাইনি। পেলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারবো।” বিধায়ক বলেন, “ বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন, এ সম্পর্কে কিছু বলবো না।”